‘নবম শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজন শিক্ষায় বড় লিঙ্গবৈষম্য’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:০৪ পিএম, ০২ অক্টোবর ২০২৪

নতুন শিক্ষাক্রমে নবম শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজন তুলে দেওয়া হয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকার এসে আবারও সেই পদ্ধতি চালু করেছে। নবম শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজনের এ প্রক্রিয়া বড় ধরনের লিঙ্গবৈষম্য তৈরি করছে বলে মনে করে দেশে শিক্ষা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থাগুলোর মোর্চা ‘গণসাক্ষরতা অভিযান’।

‘বৈষম্যদূরীকরণে শিক্ষায় নিরবচ্ছিন্ন রূপান্তর: প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ’ শীর্ষক পলিসি ব্রিফে এ মতামত তুলে ধরে সংস্থাটি। বুধবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এ নিয়ে ব্রিফিং করা হয়।

গণসাক্ষরতা অভিযান তাদের পলিসি ব্রিফে (নীতি-সংক্ষেপ) পাঁচটি স্তরে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাব করেছে। স্তরগুলো হলো- প্রাক-প্রাথমিক বা শৈশবকালীন শিক্ষা, প্রাথমিক শিক্ষা, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা, উচ্চশিক্ষা এবং শিক্ষা প্রশাসন, ব্যবস্থাপনা ও বিনিয়োগ।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার স্তরে নবম শ্রেণির বিভাগ বিভাজে কী ধরনের লিঙ্গবৈষম্য হয়, তা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য হলো- শিক্ষার্থীকে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুত করা এবং জীবিকানির্ভর দক্ষতার উন্নয়ন ঘটিয়ে কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে সন্নিবেশ করে দেওয়া। এজন্য মাধ্যমিক শিক্ষা বহুপথ সৃষ্টিকারী একটি ব্যবস্থা হওয়া দরকার, যাতে এ শিক্ষা গ্রহণের পর যেকোনো শিক্ষার্থী তার ইচ্ছা ও প্রবণতা অনুযায়ী বিভিন্ন দিকে অগ্রসর হওয়ার সুযোগ পায়।

সেখানে আরও বলা হয়, বিষয়ের ধারণায়ন আধুনিক না হওয়ার কারণে শিক্ষাব্যবস্থায় বৈষম্যের বড় ক্ষেত্র হলো বিজ্ঞান শিক্ষা।ব্যানবেইসের ২০২২ সালের তথ্যানুযায়ী- বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয় নবম শ্রেণির ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্রী মাত্র ১৫ শতাংশ। কাজেই বিভাগ বিভাজন বড় ধরনের জেন্ডারবৈষম্য তৈরি করেছে।’

মাধ্যমিকে বিজ্ঞান শিক্ষাকে তাত্ত্বিক ও ল্যাবনির্ভর করে ফেলায় শহর ও গ্রামে বিজ্ঞান শিক্ষায় ব্যাপক বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে পলিসি ব্রিফে বলা হয়েছে, অষ্টম শ্রেণির পর বিজ্ঞান বিষয়ে কোনো ধারণা না পাওয়ায় তারা চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছে না। পৃথিবী যতই প্রযুক্তিনির্ভর হবে, ততই এর চাহিদা বাড়তে থাকবে। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে আধুনিকায়ন করে ভবিষ্যৎ পৃথিবীর কর্মক্ষেত্রের চাহিদা অনুযায়ী রূপান্তর করে মূলধারায় সন্নিবেশ ঘটনানো সময়ের দাবি।

এ ধরনের বৈষম্য কমাতে কিছু সুপারিশও করেছে গণসাক্ষরতা অভিযান। তাতে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ ও নিরবচ্ছিন্ন শিক্ষায় রূপান্তর, দুই মন্ত্রণালয় ভেঙে একক মন্ত্রণালয় করা, দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিজ্ঞান শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা, দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা নিশ্চিত করা ইত্যাদি।

গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও এডুকেশন ওয়াচের সদস্যসচিব রাশেদা কে চৌধুরী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এডুকেশন ওয়াচের আহ্বায়ক আহমদ মোশতাক রাজা, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক মনজুর আহমদ, ঢাবির আইইআরের অধ্যাপক সৈয়দ শাহাদৎ হোসেন প্রমুখ।

এএএইচ/এমআইএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।