শিক্ষা প্রশাসনের দুর্নীতি-দলবাজ কর্মকর্তাদের দ্রুত বদলির দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৪৫ পিএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিক্ষা প্রশাসনে দুর্নীতিবাজ ও দলবাজ কর্মকর্তাদের দ্রুত বদলির দাবি জানিয়েছে ‘বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার মর্যাদা রক্ষা কমিটি’। পদোন্নতি, বদলি ও পদায়ন নীতিমালা, পদ সৃজন, পদ আপগ্রেড, অর্জিত ছুটি ও আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের দাবি জানান তারা।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনের সভাপতি এস এম কামাল হোসেন। এসময় তিনি প্রত্যেক উপজেলায় একটি কলেজ জাতীয়করণের নামে রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকারি করা ৩০০ কলেজের জাতীয়করণ বাতিলের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের বঞ্চিত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি, শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পদায়ন করা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের অপসারণ, রাষ্ট্র সংস্কার ও শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য নিরসনের দাবি জানানো হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আন্দোলনে শাহাদতবরণকারী সবাইকে জাতীয় বীরের মর্যাদা দিতে হবে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদদের নাম ও স্মৃতিফলক উন্মোচন, জাতীয় পাঠ্যপুস্তকে এ বিপ্লবী সরকার গঠনের প্রেক্ষাপট এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরে পাঠ্যভুক্ত করতে হবে।

তারা বলেন, বিভিন্ন দপ্তরে বিগত স্বৈরাচার সরকারের রেখে যাওয়া দলদাস ও দুর্নীতিবাজদের অপসারণ করা হলেও শিক্ষা প্রশাসনের সর্বস্তরে তারা এখনও বহাল তবিয়তে। তাদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে। এমনকি বিগত স্বৈরাচারের সুবিধাভোগীদের আবারও লাভজনক পদে পদায়ন শুরু হয়েছে, যা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনাবিরোধী। অবিলম্বে মন্ত্রণালয়ের কলেজ উইং ও শিক্ষা প্রশাসনের সর্বস্তর ঢেলে সাজাতে হবে।

‘পদোন্নতিযোগ্য সবাইকে সব টায়ারে যেমন- অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপক পদে একসঙ্গে পদোন্নতি প্রদান এবং আগের তিন টায়ারে একসঙ্গেই পদোন্নতি দেওয়া হতো। কোনো কারণ ছাড়াই দীর্ঘদিন পদোন্নতি বন্ধ। ১৬তম বিসিএসের কর্মকর্তারা দীর্ঘ ২৮ বছর চাকরি করেও পদোন্নতি না পেয়ে সহযোগী অধ্যাপক পদ থেকে অবসরে যাচ্ছেন, যা খুবই কষ্টকর। আমরা ১৬ ব্যাচের কর্মকর্তাদের ভুতাপেক্ষভাবে গত বছরের মার্চ থেকে পদোন্নতির দাবি করছি।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শূন্যপদ না থাকার অজুহাতে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদোন্নতি-বঞ্চিত রাখা হচ্ছে। অথচ প্রশাসন ক্যাডারসহ অনেক ক্যাডারে সুপারনিউমারারি পদ সৃষ্টি করে পদোন্নতি দেওয়া হয়। শিক্ষা ক্যাডারের ক্ষেত্রেও সুপারনিউমারারি পদে পদোন্নতি দিয়ে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের করতে হবে।

‘শিক্ষা ক্যাডারে বদলি ও পদায়নের ক্ষেত্রে চরম বৈষম্য বিদ্যমান। নির্দিষ্ট কিছু শিক্ষক-কর্মকর্তা ঘুরেফিরে মাউশি, ডিআইএ, ব্যানবেইস, নায়েম, শিক্ষা বোর্ড, এনসিটিবিসহ বিভিন্ন দপ্তর এবং ঢাকাসহ বিভাগীয় ও জেলার প্রধান কলেজগুলোতে কর্মরত। অন্যদিকে সৎ, যোগ্য, দক্ষ, নিরীহ শিক্ষক-কর্মকর্তারা প্রত্যন্ত অঞ্চল, হাওর-দ্বীপ, পাহাড় এবং জেলা-উপজেলার ছোট কলেজে কর্মরত। এ বৈষম্য নিরসনে অবিলম্বে সুষ্ঠু বদলি পদায়ন নীতিমালা জারি করে, তা বাস্তবায়ন করতে হবে।’

শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পঞ্চম গ্রেড থেকে তৃতীয় গ্রেডে পদোন্নতি প্রদান এবং আনুপাতিক হারে গ্রেড-২ ও গ্রেড-১ পদ সৃষ্টি করে ৬ স্তরের পদ-সোপান তৈরি করার দাবিও জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সাবেক সহ-সভাপতি ও সংগঠনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আ জ ম রুহুল কাদির। অন্যদের উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি এস এম কামাল আহমেদ, অধ্যাপক আবেদ নোমানই, অধ্যাপক কাজী ফারুক আহম্মদ, অধ্যাপক ড. ছদরুদ্দীন আহমদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাঈন উদ্দিন, আকলিমা আক্তার, এনামুল হক, ইমরান আলী, কামরুল হাসান, ড. সালাহ উদ্দিন আফসার, গোলাম আজম প্রমুখ।

এএএইচ/এমএএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।