দুর্যোগের দিনে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে খরচ বাড়াবেন না: ঢাবি ভিসি
শুভেচ্ছা জানাতে ফুল কিনতে নিরুৎসাহিত করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি মনে করেন, দেশের এ দুর্যোগের দিনে টাকা দিয়ে ফুল কিনে শুভেচ্ছা জানানো বাহুল্যতা। এটা বর্জনে উৎসাহিত করেছেন ঢাবির ৩০তম এ উপাচার্য।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) তাকে সাময়িকভাবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘রাজনৈতিক একটি পট-পরিবর্তনের পরপরই দেশ ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে। মানবিক বিপর্যয় দেখা গিয়েছে। আমাদের ছাত্র-ছাত্রীসহ আপামর মানুষ বন্যার্তদের সহায়তায় নিরলস কাজ করছেন। যা আমাদেরকে জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ জোগাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের এমন দুর্যোগের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পয়সা খরচ করে ফুল কিনে তা দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর প্রয়োজন নেই। এটা একটা দায়িত্বমাত্র। নিঃসন্দেহে এটা (উপাচার্য পদে নিয়োগ) সম্মান ও মর্যাদাপূর্ণ। এ দুর্যোগে দয়া করে কেউ ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে আসবেন না। দুর্যোগে সবাইকে বাহুল্য বর্জন করতে হবে।’
আরও পড়ুন
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ, প্রজ্ঞাপন জারি
- রাজনীতি করি না, ভবিষ্যতেও করবো না: ঢাবির নতুন ভিসি
সবার সহযোগিতা ও পরামর্শ চেয়ে নতুন উপাচার্য বলেন, ‘আমি যেটুকু বলবো- ফুল লাগবে না। আপনারা উদার মনে, খালি হাতে আসুন, আমাকে পরামর্শ দিন। সম্মিলিতভাবে দল-মত নির্বিশেষে সবার সহযোগিতা নিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।’
এর আগে গতকাল সোমবার অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান ঢাবির উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের সূত্রে বিভিন্ন গণমাধ্যমেও এ নিয়ে সংবাদ প্রচার হয়। পরে অবশ্য বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশারও সৃষ্টি হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিত্তিহীন সূত্রে ছড়িয়ে পড়ে যে, উপাচার্য পদে তার নিয়োগ আটকে গেছে। তবে সব জল্পনার অবসান ঘটলো আজ মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে।
আজ জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আদেশ, ১৯৭৩-এর আর্টিকেল ১১(২) অনুযায়ী অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাময়িকভাবে উপাচার্য পদে নিয়োগ দেওয়া হলো।
তাকে নিয়োগের ক্ষেত্রে পাঁচটি শর্তের কথা উল্লেখ করা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে। সেগুলো হলো, উপাচার্য পদে তার এ নিয়োগ যোগদানের তারিখ থেকে কার্যকর হবে। এ পদে তিনি তার বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতনভাতাদি প্রাপ্য হবেন। একই সঙ্গে তিনি বিধি অনুযায়ী পদসংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন।
তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে তিনি সার্বক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন। রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর প্রয়োজনে যে কোনো সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
২০২৩ সালের ১৫ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। কোটা সংস্কার আন্দোলনে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পদত্যাগ করেন মাকসুদ কামাল।
এএএইচ/কেএসআর/এমএস