প্রত্যয় স্কিমে সবাই এলে শিক্ষকরা কেন যাবো না: অধ্যাপক নিজামুল
সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে টানা দুই সপ্তাহ সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। দাবি আদায়ে এতদিন তারা অনড় থাকলেও শনিবার (১৩ জুলাই) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ছয় নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষক নেতারা। এরপর কঠোর অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।
ফেডারেশনের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আওয়ামী লীগপন্থি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইয়া। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর অধ্যাপক নিজামুল হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে প্রত্যয় স্কিম চালু হচ্ছে না। এটা সবার জন্য ২০২৫ সালের জুলাই থেকে চালু হবে। তখন সেই স্কিমে সুযোগ-সুবিধা কেমন থাকবে, সেটা দেখে আমরা আবার সিদ্ধান্ত নেবো। আপাতত এটা চালু হচ্ছে না বলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আমাদের নিশ্চিত করেছেন।’
সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম সব সরকারি কর্মচারীর জন্য চালু হলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরাও তখন তাতে যাবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেশটা তো আমাদের সবার। সর্বজনীন মানে সবার জন্য। যদি সবার জন্য প্রত্যয় স্কিম করা হয়, তাহলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা সেখানে যাবো না কেন? নিশ্চয় যাবো।’
আরও পড়ুন
- আলোচনা ফলপ্রসূ, শিগগির ক্লাসে ফিরছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা
- ভুল বোঝাবুঝি দূর হয়েছে, আগামী বছর থেকে সবাই আসবেন পেনশন স্কিমে
- পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বন্ধ, ক্লাস শুরুর আগেই ‘সেশনজট’
‘তবে হ্যাঁ, এটা (প্রত্যয় স্কিম) সংস্কার করা হবে বলে আমরা আশ্বাস পেয়েছি। যখন এটা চালু হবে, তখন সেটা আমরা যাচাই করে দেখবো। যদি দেখি আমাদের যে সুযোগ-সুবিধাগুলো বর্তমানে আছে, সেগুলো প্রত্যয় স্কিমেও আছে; তাহলে সেটা গ্রহণ করবো। সেখানে সুযোগ-সুবিধা কমানো হলে তখন শিক্ষক নেতারা সিদ্ধান্ত নেবেন’, যোগ করেন অধ্যাপক নিজামুল হক।
ঢাবি শিক্ষক সমিতির এ নেতা আরও বলেন, ‘আমরা যেটা চাচ্ছি তা হলো, সবচেয়ে ভালো হবে যদি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেলটা করে দেওয়া হয়। তাহলে এসব নিয়ে আর কখনো কোনো ঝামেলা থাকবে না।’
আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে এ বৈঠকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষক সমিতির নেতারাও অংশ নেন। তবে তাদেরকে ওই বৈঠকে তেমন কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। ফলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতারা বিষয়টি নিয়ে ‘ক্ষুব্ধ’। রোববার (১৪ জুলাই) ফেডারেশনের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে তারা দ্বিমত জানাতে পারেন বলে জানিয়েছেন দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতারা।
প্রত্যয় স্কিমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে গত ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি করেন শিক্ষকরা। এরপর ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু করেন তারা। সেদিন থেকে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকছেন। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও একই দাবিতে কর্মবিরতি করে আসছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অচল হয়ে পড়েছে।
এএএইচ/এসআর