‘পরীক্ষা দিতে না পারলে আমার মায়ের স্বপ্ন নষ্ট হয়ে যাবে’
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর দিনেই বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েন পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। কেউ ছাতা মাথায়, কেউবা আবার বৃষ্টিতে ভিজেই ছোটেন কেন্দ্রের দিকে। সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে কেন্দ্রে প্রবেশের নির্দেশ থাকায় নির্ধারিত সময়ে কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারবেন কি না- এ আশঙ্কায় বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে ছুটতে দেখা যায় অনেককেই।
রোববার (৩০ জুন) সকাল ৯টার পর রাজধানীর রামপুরা, মগবাজার ও মালিবাগ ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। বৃষ্টিতে সবেচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন যাদের সঙ্গে কোনো অভিভাবক কেন্দ্রে আসেননি এমন শিক্ষার্থীরা।
খিলগাঁও মডেল কলেজে পরীক্ষাকেন্দ্র আসিফ হাসানের। সকালে সাইকেলে করে পরীক্ষা দিতে বের হন। ৯টার দিকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে আটকা পড়েন রামপুরা বাজার এলাকায়। সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর রাস্তার পাশে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে সাইকেলে তালা লাগিয়ে বাসে উঠে রওনা হন আসিফ।
যাওয়ার আগে কান্নাজড়িত কন্ঠে জাগো নিউজকে বলেন, ‘পৌঁছাতে পারবো কি না জানি না। যদি পরীক্ষা দিতে না পারি আমার মায়ের স্বপ্নটা নষ্ট হয়ে যাবে।’
আসিফ গুলশান কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী। তার বাবা নেই। মা একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। বাড্ডার সাঁতারকুল এলাকায় ভাড়া বাসায় মায়ের সঙ্গে থাকেন তিনি।
আরও পড়ুন
সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে বাসা থেকে বের হন। ৮টা ৫৫ মিনিটে বৃষ্টিতে আটকা পড়েন। সঙ্গে শুধু ছোট একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে প্রবেশপত্র ও কলম। ছাতাও ছিল না। তুমুল বৃষ্টিতে সাইকেল চালাতে কষ্ট হওয়ায় রামপুরা বাজার এলাকায় থামেন তিনি। সেখান থেকে ৯টা ২৫ মিনিটে বাসে রওনা করেন।
মগবাজার ওয়ারলেস মোড়ে কথা হয় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী মরিয়ম সুলতানার সঙ্গে। মায়ের সঙ্গে কেন্দ্রে যাচ্ছিলেন তিনি। জানতে চাইলে মরিয়ম সুলতানা বলেন, হঠাৎ করে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বিপদে পড়ে গেছি। রাস্তায় খালি রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা পেতেও দেরি হচ্ছে।
৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা এবং কারিগরি বোর্ডের অধীন দেশের ৬০ জেলায় একযোগে পরীক্ষা শুরু হয়েছে আজ। শুধু সিলেট বিভাগের চার জেলায় বন্যা পরিস্থিতির কারণে ৮ জুলাই পর্যন্ত পরীক্ষা স্থগিত থাকবে। ৯ জুলাই থেকে প্রকাশিত সময়সূচি মেনে পরীক্ষা নেওয়া হবে।
চলতি বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ড, কারিগরি বোর্ড ও মাদরাসা বোর্ডের এইচএসসি, আলিম, এইচএসসি (বিএম/বিএমটি), এইচএসসি (ভোকেশনাল), ডিপ্লোমা ইন কমার্স পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ৫০ হাজার ২৮১ এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৫০৯ জন। ২০২৩ সালের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে ৯১ লাখ ৪৪৮ জন।
এএইচ/কেএসআর/এমএস