শিক্ষকদের হুঁশিয়ারি
‘প্রত্যয় স্কিম’ বাতিল না করলে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে টানা কর্মবিরতি
সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমে শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে দুইমাস ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়র শিক্ষকরা। নতুন চালু করা প্রত্যয় স্কিমে যুক্ত হতে চান না তারা। শিক্ষকদের দাবি, আগের নিয়মে তাদের পেনশন চালু রাখা হোক।
দাবি আদায়ে গত ৪ জুন সব বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকরা। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। ওইদিন নতুন করে সরকারকে আলটিমেটাম দেন ফেডারেশনের নেতারা।
শিক্ষক নেতাদের বেঁধে দেওয়া সেই সময়সীমা শেষ হবে সোমবার (২৪ জুন)। এ সময়ের মধ্যে দাবি না মানলে পরদিন ২৫ জুন থেকে টানা তিনদিন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন শিক্ষকরা। এরপর ৩০ জুন পূর্ণ দিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন তারা। তারপরও দাবি না মানলে ১ জুলাই থেকে টানা সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাবেন শিক্ষকরা।
এদিকে, শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতা ও জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকার এ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। প্রত্যয় স্কিমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের যুক্ত করতে যে প্রজ্ঞাপন সরকার জারি করেছিল, সেই সিদ্ধান্তেই অটল রয়েছে। অন্যদিকে, শিক্ষক নেতারাও তাদের দাবিতে অনড়।
আরও পড়ুন:
- সর্বজনীন পেনশন স্কিমে যুক্ত হলো ‘প্রত্যয় স্কিম’
- বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা প্রত্যয় স্কিমের বিরোধিতা করছেন কেন?
- ঢাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের কর্মবিরতি, বন্ধ প্রশাসনিক কার্যক্রম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা জাগো নিউজকে বলেন, আমরা ২৫, ২৬ ও ২৭ জুন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করবো। ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মসূচি চলবে। এরপর আমরা আর সময় দিতে চাই না। ১ জুলাই থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। দাবি না মানা পর্যন্ত সেটা চলবে। আমরা মনে করি, আমাদের যৌক্তিক দাবির প্রতি শিক্ষার্থীসহ দেশের মানুষের সমর্থন রয়েছে।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আমরা কোনো আলাপ-আলোচনার কথা শুনিনি। আমরা যে আলটিমেটাম দিয়েছিলাম, সেটাতেই আমরা অনড় আছি। ২৪ জুনের মধ্যে দাবি না মানলে পরদিন ২৫ জুন থেকে আমাদের কর্মসূচি শুরু হবে।
শনিবার (২২ জুন) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতাদের বৈঠক রয়েছে এবং সেখানে কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা হবে বলেও জানান এ শিক্ষক নেতা।
বিষয়টি নিয়ে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের দুই কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছেন জাগো নিউজের এ প্রতিবেদক। তারা বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তাদের ভাষ্যমতে, ‘প্রত্যয় স্কিম চালু হবে। এটা থেকে সরে আসা কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বাদ দেওয়ার কোনো চিন্তা-ভাবনা বা আলোচনা নেই।’
কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগো নিউজকে বলেন, ‘তারা (বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক) তো বলেছিলেন অন্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ পেনশনের (সর্বজনীন) আওতায় আসলে তারাও এটা মেনে নেবেন। সরকার তো ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে সব সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বজনীন পেনশনের স্কিমের আওতায় আনছে। তাহলে এখনো তাদের (বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক) আপত্তি কেন?’
এএএইচ/এসএনআর/এমএস