তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যেই খুললো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
সারাদেশে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এর মধ্যেই আজ রোববার (২৮ এপ্রিল) খুলেছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যথারীতি ক্লাস চলছে। সময়সূচিতে কিছুটা পরিবর্তন এনে খুলে দেওয়া হয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ও।
শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় বন্ধ রয়েছে শুধু প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়। তাছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠানে অ্যাসেম্বলি হবে না। এমনকি শ্রেণিকক্ষের বাইরের কোনো কাজও শিক্ষার্থীদের দিয়ে করানো যাবে না।
এদিকে সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের আনাগোনা দেখা গেছে। অধিকাংশ শিক্ষার্থীর সঙ্গে দেখা গেছে অভিভাবককে। দীর্ঘদিন পর স্কুল খোলায় একদিকে যেমন ক্লাসে যাওয়ার তাড়া, তেমনি রয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও।
মায়ের সঙ্গে স্কুলে যাচ্ছে সাত বছরের মারজিয়া মিম। রামপুরার উলন রোডের একটি কিন্ডারগার্টেনের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী সে। কতদিন পর স্কুলে যাচ্ছো জিজ্ঞেস করতেই মারজিয়া বলে, ‘অনেকদিন পর। রোজার আগে গিয়েছিলাম। তারপর তো বন্ধ ছিল। আর যাইনি। আজ যাচ্ছি।’
আরও পড়ুন
- তাপপ্রবাহে শিক্ষার্থীর ক্ষতি হলে দায় সরকারের: অভিভাবক ফোরাম
- ‘ওয়েবসাইট হালনাগাদ না করায় পিছিয়ে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো’
মারজিয়ার মা আম্বিয়া খাতুন বলেন, ‘বাসায় যতটুকু সম্ভব পড়িয়েছি। তবুও স্কুলের পড়া আর বাসার পড়া কি এক? সকালে স্কুল। সাড়ে ৯টার মধ্যেই শেষ। সেজন্য নিয়ে যাচ্ছি। বেশি গরম শুরুর আগেই বাসায় চলে আসা যাবে। সমস্যা হবে না।’
বাড্ডা আলাতুন্নেছা স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলে, স্কুল খুলছে ভালোই লাগছে। তবে গরমে এত সময় স্কুলে থাকা কষ্ট হবে। ক্লাস কমিয়ে মর্নিং স্কুল করে দিলে ভালো হতো।
স্কুলটির সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল আহাদ জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের এখানে সব শ্রেণিকক্ষে পর্যাপ্ত ফ্যান আছে। এখন ক্লাসে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও ওত বেশি না যে গাদাগাদি করে বসতে হবে। আশা করি সমস্যা হবে না। তারপরও তো বলা যায় না। আবহাওয়া দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে যাক, সেই প্রত্যাশা করি।
ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে গত ২১ এপ্রিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ছিল। তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে ছুটি বাড়ানো হয়। এতে আরও এক সপ্তাহ বন্ধ থাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গত ২৫ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে রোববার (২৮ এপ্রিল) থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যথারীতি ক্লাস শুরুর কথা বলা হয়। পাশাপাশি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় যে শিখন ঘাটতি হয়েছে, তা পূরণে এখন থেকে শনিবারও মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা খোলা থাকবে।
এদিকে, সময়সূচিতে পরিবর্তন এনে ক্লাস শুরু করেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। নতুন সূচি অনুযায়ী- এক শিফটের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চলবে সকাল ৮টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। আর দুই শিফটের বিদ্যালয়ে প্রথম শিফট ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা এবং দ্বিতীয় শিফট পৌনে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে। তাছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চললেও বন্ধ থাকবে অ্যাসেম্বলি। পাশাপাশি প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় আপাতত বন্ধই থাকছে।
এএএইচ/এসএনআর/এমএস