ট্রান্সজেন্ডার ইস্যু
পাঠ্যবই ছিঁড়ে চাকরি হারালেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ
ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে পাঠ্যবই ছিঁড়ে বিতর্কের মুখে চাকরি হারালেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলোসফি বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব। ওই শিক্ষক তার নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া স্ট্যাটাস দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন। পাশাপাশি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তার সঙ্গে আর চুক্তি বহাল না রাখার তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই সোমবার (২২ জানুয়ারি) সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, আসিফ মাহতাবের সঙ্গে তাদের কোনো চুক্তি নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ শাখা থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আসিফ মাহতাব ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তার সঙ্গে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির কোনো চুক্তি নেই। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি তার কর্মী এবং তাদের চুক্তির গোপনীয়তা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ক্যাম্পাসে সবার মাঝে সহযোগিতামূলক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি তার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে শ্রদ্ধা করে।
জানতে চাইলে আসিফ মাহতাব জাগো নিউজকে বলেন, তারা বিজ্ঞপ্তিতে আসল ঘটনাই বলেনি। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির নিয়ম হলো- কয়েকটি ক্লাস করানোর পর চুক্তি করে। আমি এরই মধ্যে একটি ক্লাস করিয়েছি। কিন্তু হঠাৎ করেই তারা কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলো, সেটি সবার বোঝার কথা।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ব্র্যাক যে সিদ্ধান্ত নিলো সেটি অনৈতিক। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অনেক আগে থেকেই ট্রান্সজেন্ডার নীতি প্রচারে অর্থ বিনিয়োগের অভিযোগ ছিল। তাদের এমন সিদ্ধান্তে সেটি এবার প্রমাণ হলো।
তিনি মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেই জানিয়ে আপাতত কোনো পদক্ষেপের কথা ভাবছেন না বলেও জানান আসিফ মাহতাব।
এর আগে সোমবার দুপুরে আসিফ মাহতাবের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানাতে সভায় মিলিত হন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দিয়ে আসিফ মাহতাবের সঙ্গে চুক্তি না থাকার বিষয়টি জানানো হয়।
জানা গেছে, গত ১৯ জানুয়ারি রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক: বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম। ওই অনুষ্ঠানে সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের একটি অধ্যায়ে ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে আলোচনা করে শিক্ষার্থীদের মগজধোলাই করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলোসফি বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎস। এসময় তিনি সপ্তম শ্রেণির ওই বইয়ের মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা অধ্যায়ে ‘শরীফার গল্প’ অংশের পাতা ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানান।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। রোববার (২১ জানুয়ারি) রাতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আসিফ মাহতাবকে আর ক্লাস নিতে না যাওয়ার জন্য জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানান তিনি।
এএএইচ/এমকেআর/এমএস