বই পেলো শিক্ষার্থীরা, নতুন শিক্ষাবর্ষে ক্লাস শুরু কবে?
বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে পাঠ্যবই তুলে দিয়েছে সরকার। শিক্ষাবর্ষ শুরুর দিনে শতভাগ বই পেয়েছে প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। অষ্টম-নবমের শিক্ষার্থীরাও ৫-৬টি করে বই হাতে নিয়ে বাসায় ফিরেছে। প্রথম দিন উৎসব-আনন্দেই কেটেছে শিক্ষার্থীদের।
৭ জানুয়ারি নির্বাচন। প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা। কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন বয়কটের ডাক দিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। সেভাবে অস্থিতিশীলতা না থাকলেও আতঙ্কে রয়েছে সাধারণ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে নতুন শিক্ষাবর্ষে পুরোদমে ক্লাস বা শ্রেণি কার্যক্রম কবে থেকে শুরু হবে, তা নিয়ে এখন প্রশ্ন শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের।
এ নিয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মাধ্যমিক বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘শিক্ষাবর্ষ শুরু ১ জানুয়ারি থেকেই। যেহেতু সব শ্রেণির শিক্ষার্থী বই পেয়েছে, ভর্তি প্রক্রিয়াও শেষ। সেক্ষেত্রে চাইলে যে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১ তারিখ থেকেই ক্লাস শুরু করতে পারে। এ নিয়ে আমরা কোনো নির্দেশনা দেইনি।’
তিনি বলেন, ‘চলতি মাসের মধ্যেই পুরোদমে ক্লাস শুরু করতে বলেছি। সামনে যেহেতু নির্বাচন। নির্বাচনের আগে যদি কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্লাস শুরু করতে না চায়, সেক্ষেত্রে তারা নির্বাচনের পর থেকে শুরু করবে। এরই মধ্যে আমরা রুটিনের ফরম্যাট দিয়েছি। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ফরম্যাট অনুসরণ করে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের রুটিন তৈরি করবে।’
আরও পড়ুন>> বছরের প্রথম দিনে নতুন বই হাতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা
এদিকে, রাজধানীর বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখনো কোনো প্রতিষ্ঠানই আনুষ্ঠানিকভাবে ক্লাস শুরুর তারিখ জানায়নি। তবে অনেকে ক্লাস রুটিন প্রকাশ করেছে। দ্রুত ক্লাস শুরুর তারিখ ঠিক করে তা জানিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা।
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আজ ছাত্র-ছাত্রীরা বই পেলো। দু-একদিন আসা-যাওয়া করবে। দ্রুত আমরা ক্লাস শুরুর তারিখ জানিয়ে দেবো।’
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ৩ জানুয়ারি থেকে শিক্ষার্থীদের ড্রেস কোড মেনে টিফিনের প্রস্তুতি নিয়েই স্কুলে আসতে বলেছি। তবে পুরোদমে ক্লাস শুরু করতে দেরি হতে পারে।’
আরও পড়ুন>> অনেক শিক্ষার্থী ঢাকায় ফেরেনি, তাই উপস্থিতিও কম
জানা গেছে, এবার বেশিরভাগ ক্লাসে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হওয়ায় পাঠপরিকল্পনায়ও পরিবর্তন এসেছে। শিখনকালীন মূল্যায়ন থাকায় শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিটি ক্লাস গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) আগেই ক্লাস রুটিনের ফরম্যাট তৈরি করে দিয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এবং প্রাথমিক, মাদরাসা, কারিগরি শিক্ষা অধিধপ্তর পৃথক রুটিন আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে তা মেনে চলার নির্দেশনা দিয়েছে।
এনসিটিবির তথ্যমতে, ২০২৩ সালে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে পড়ানো হয়। এবার অর্থাৎ, ২০২৪ সালে প্রাথমিক পর্যায়ের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণি এবং মাধ্যমিকের অষ্টম-নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম পড়ানো হবে। দুই শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালুর পর থেকেই এ নিয়ে নানা সমালোচনা শুরু হয়। আন্দোলনেও নামেন অভিভাবকদের একটি অংশ। মামলা ও সরকারের চাপেই কার্যত তাদের আন্দোলন গুটিয়ে যায়। এজন্য সরকারের শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান, ষান্মাসিক মূল্যায়ন ও সামষ্টিক মূল্যায়ন নিয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে এগোচ্ছে।
এএএইচ/ইএ/এএসএম