৫৪০৬ প্রার্থীর শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নভঙ্গের নেপথ্যে কী?

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৫৩ এএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হন ৩২ হাজার ৪৮০ জন শিক্ষক নিয়োগপ্রত্যাশী। তাদের মধ্যে চূড়ান্ত সুপারিশ পেলেন ২৭ হাজার ৭৪ জন। নির্বাচিত হয়েও শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন ভাঙলো ৫৪০৬ জন প্রার্থীর। তাদের বাদ পড়ার কারণও জানিয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টায় চূড়ান্ত সুপারিশপত্র প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। একই সঙ্গে সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীদের মোবাইলেও পৌঁছে যায় সুখবর। সঙ্গে যোগদানের নির্দেশনাও। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর চূড়ান্ত সুপারিশ পেয়ে উচ্ছ্বসিত প্রার্থীরা।

অনেকে এসএমএস পেয়েই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খুশির খবর শেয়ার করেছেন। তবে যারা প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েও চূড়ান্ত সুপারিশ পাননি তাদের মধ্যে চরম হতাশাও দেখা গেছে। কেউ কেউ বাদ পড়েছেন ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে। আবার কারও কারও জটিলতার কারণে আটকে গেছে সুপারিশ। কবে জটিলতা কাটবে, কবে সুপারিশ পাবেন, তা নিয়ে শঙ্কায় তারা।

এনটিআরসিএ সূত্র জানায়, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির আওতায় প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হন ৩২ হাজার ৪৮০ প্রার্থী। তাদের মধ্য থেকে ২৭ হাজার ৭৪ জনকে নিয়োগে চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের মধ্যে ৩ হাজার ৬০৭ জন পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য ভি-রোল ফরম জমা দেননি। এজন্য তারা বাদ পড়েছেন। বাকি ১ হাজার ৭৯৯ জনকে জাল সনদ, শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা, বয়স ৩৫ বছর অতিক্রম করা, নিবন্ধন সনদ না থাকা সত্ত্বেও ভুল পদে আবেদন করায়, মামলার স্থগিতাদেশ থাকায় কারণে নিযোগে সুপারিশ করা সম্ভব হয়নি।

ঠিক কী কারণে সুপারিশ পাননি তা বুঝে উঠতে পারছেন না কুষ্টিয়ার কুমারখালীর সাইদুল ইসলাম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘হতাশ হলাম। এতদিনের আশা পূরণ হলো না। শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নটা শেষ হয়ে গেলো। হয়তো আর স্বপ্নের পেশায় যাওয়ার সুযোগ পাবো না। কী কারণে এমনটা হলো জানি না।’ তবে যারা সুপারিশ পেয়েছেন, তাদের অভিনন্দন জানাতে ভোলেননি সাইদুল।

নরসিংদীর সোনালী বিশ্বাসও সুপারিশ না পেয়ে হতাশ। তিনিও ফেসবুকে বেশ কয়েকটি স্ট্যাটাস শেয়ার করেছেন। কারণ জানার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট করছেন। কেউ সঠিক কারণ বলতে পারছেন না। তিনি লিখেছেন, ‘খুব কষ্টের একটি রাত আজ আমার জীবনে। আজ সন্ধ্যায় যখন জানলাম, রাতে সুপারিশ করা হবে। আশায় বুক বেঁধেছিলাম। আমার পরিবারের সবাই খুব চিহ্নিত ছিলেন। তাদের এখন আমি কী জবাব দেবো?’

সাইদুল ও সোনালী বিশ্বাসের মতো অনেক প্রার্থী চূড়ান্ত সুপারিশ না পেয়ে চরম হতাশ। তারাও ফেসবুকে করণীয় জানতে চেয়ে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন।

এদিকে বুধবার রাতেই সুপারিশ পাওয়া প্রার্থী এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে (যেখানে সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থী যোগদান করবেন) এসএমএসের মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়েছে এনটিআরসিএ। এছাড়া চূড়ান্ত ফলাফল এনটিআরসিএর ওয়েবসাইট পাওয়া যাচ্ছে।

চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়া শিক্ষকদের আগামী ১৯ অক্টোবরের মধ্যে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এনটিআরসিএর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্ধারিত লিংকে প্রবেশ (http://103.230.104.210:8088/ntrca/c5/app/login.php?type=19) করে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে প্রার্থীরা সুপারিশপত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। এ সুপারিশপত্র প্রিন্ট করে প্রার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ১৯ অক্টোবরের মধ্যে যোগদান করতে হবে।

সুপারিশপ্রাপ্ত হবু শিক্ষকদের যোগদানে বাধা বা ভয়ভীতি দেখালে এনটিআরসিএসহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুপারিশপ্রাপ্তদের যোগদানে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হবে, সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও সভাপতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে বলেও জানিয়েছে এনটিআরসিএ।

এএএইচ/এমআইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।