বার্ষিক প্রতিবেদনে সুপারিশ

বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম বন্ধে বিচারিক ক্ষমতা চায় ইউজিসি

মুরাদ হুসাইন
মুরাদ হুসাইন মুরাদ হুসাইন , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:১৩ এএম, ১২ জানুয়ারি ২০২৩

দেশের পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নানা অনিয়ম বন্ধ করতে তদন্তের পাশাপাশি অনিয়মের ব্যবস্থা নিতে বিচারিক ক্ষমতা চায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এ ক্ষমতা চেয়ে ইউজিসির ৪৮তম বার্ষিক প্রতিবেদনে সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ইউজিসির বার্ষিক প্রতিবেদন-২০২০ রাষ্ট্রপতির কাছে তুল দেয়ার কথা রয়েছে।

ইউজিসির সুপারিশে বলা হয়েছে, পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নানা অনিয়মের জন্য সরাসরি হস্তক্ষেপ করার বা বিচারিক ক্ষমতা নেই ইউজিসির। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম, অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তি, সনদ বাণিজ্য, আর্থিক অনিয়ম ইত্যাদি হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা ইউজিসির থাকা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন>>> যে কোনো বয়সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ আসতে পারে

ইউজিসি বিভিন্ন অনিয়মের সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ এবং দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ইউজিসির সুপারিশ অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতেও পারে, আবার নাও পারে। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অনেক সময় লেগেও যায়। নিজেই যেন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারে সেজন্য ইউজিসিকে ক্ষেত্রবিশেষে বিচারিক ক্ষমতা প্রদান করা যেতে পারে।

আরেক সুপারিশে বলা হয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে প্রায়ই স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যায়। ফলে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। নিয়োগে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং যোগ্য জনবল নিয়োগের উদ্দেশ্যে একটি স্বতন্ত্র নিয়োগ কমিশন গঠন করা যেতে পারে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের জন্য ইউজিসি প্রণীত নিয়োগের ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণ নীতিমালা বাস্তবায়নে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন>>> গণহারে মাস্টার্সে ভর্তি, বন্ধ করতে চায় ইউজিসি

উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নে উপাচার্য ও কোষ্যধ্যক্ষ নিয়োগে নীতিমালা প্রণয়ন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়স ও সময়ের বাধ্যবাধকতা শিথিল করা, বিশ্ব র্যাংকিংয়ে এগিয়ে যেতে অভ্যন্তরীণ র্যাংকিং ব্যবস্থা চালু, ক্লাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত নির্ণয়ে একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে নৈতিক শিক্ষার বিষয়টি যুক্ত করা, একাডেমিক সনদ জালিয়াতি বন্ধে কিউআর কোর্ড যুক্ত করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের জমির পরিমাণ নির্ধারণ করে দেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি জটিলতা নিসনে একটি স্বতন্ত্র কমিশন গঠন করাসহ ১৭টি সুপারিশ করেছে ইউজিসি।

রিসার্চ সাপোর্ট অ্যান্ড পাবলিকেশন বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. শাহীন সিরাজ জাগো নিউজকে বলেন, পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে ও চলমান সংকট নিরসন করে ইউজিসির ভিত মজবুত করে বিশ্ব ব্যাংকিংয়ে স্থান পেতে ইউজিসির ৪৮তম প্রতিবেদনে ১৭টি সুপারিশ করা হয়েছে। এ প্রতিবেদন আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির কাছে তুলে দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন>>> আইন লঙ্ঘন করে চলছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

তিনি বলেন, ইউজিসির প্রতিবেদনে অনেক সুপারিশ করা হলেও অনেক সুপারিশ বাস্তবায়ন হয় না বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম বন্ধ করা শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই দ্রুত ইউজিসির সুপারিশ বাস্তবায়নের আহ্বান জানান এ কর্মকর্তা।

এমএইচএম/এমআইএইচএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।