আগামী শিক্ষাবর্ষে দুই কোটি পাঠ্যবই কম ছাপাবে এনসিটিবি
২০২৩ শিক্ষাবর্ষে বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তকের সংখ্যা কমানো হয়েছে। চলতি বছরে ৩৫ কোটির কিছুটা বেশি বই ছাপানো হলেও আগামী বছরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে ৩৩ কোটির বেশি বই ছাপানো হবে। তার মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে সাড়ে ৯ কোটি আর মাধ্যমিক পর্যায়ে সাড়ে ২৩ কোটির বেশি রয়েছে।
এসব বইয়ের মধ্যে নতুন কারিকুলামের প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির সাড়ে ১৩ কোটির বেশি পাঠ্যবই ছাপানো হবে বলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপস্তুক বোর্ড (এনসিটিবি) থেকে জানা গেছে।
এনসিটিবি থেকে জানা গেছে, ২০২৩ সালের জন্য সারাদেশ থেকে প্রথম-নবম শ্রেণি পর্যন্ত ৩৩ কোটি ২৭ লাখ ৭৮ হাজার ২০২টি বিনামূল্যের বইয়ের চাহিদা এসেছে। তার মধ্যে নতুন কারিকুলামের প্রাথমিক স্তরের প্রথম শ্রেণির ১ কোটি ২০ লাখ ২৬ হাজারসহ পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৯ কোটি ৫৬ হাজার পাঠ্যবই ছাপানো হবে।
মাধ্যমিক স্তরের নতুন কারিকুলামের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ১২ কোটি ৫১ লাখ ৬৭ হাজার ১২৮টি বই ছাপানে হচ্ছে। নবম শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক স্তরে মোট ২৩ কোটি ৭১ লাখ ৬৮ হাজার ৩০২টি বই ছাপানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর বাইরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল বই রয়েছে। এ দুই স্তরের জন্য প্রায় ১২ লাখ বই ছাপানো হবে।
দেখা গেছে, ২০২২ শিক্ষাবর্ষের জন্য মোট ৩৫ কোটির কিছু বেশি বই ছাপা হয়। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরে ৯ কোটি ৯৮ লাখ ৯২ হাজার ২৮৮টি বই। এর মধ্যে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর দুই লাখ ৩৬৪টি বই রয়েছে। বাকি বই মাধ্যমিক স্তরের।
সংশ্লিষ্টরা জানান, অন্যান্য বছরে এ সেপ্টেম্বর মাসের ৬ থেকে ৮ কোটি বিনামূল্যের পাঠ্যবই দেশের বিভিন্ন জেলায় পৌঁছে গেলেও এবার তা সম্ভব হয়নি। করোনা পরিস্থিতি, ডলারের দর ঊর্ধ্বগতিতে কাগজের মূল্য বৃদ্ধির কারণে বই ছাপানোর কাজ পিছিয়ে যায়। বই তৈরিতে এখানো দরপত্রের কাজ চূড়ান্ত করা হয়। নতুন কারিকুলামের দরপত্র চূড়ান্ত হলেও প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের অনেক বইয়ের কাজ এখানো শুরু করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বৃহস্পতিবার জাগো নিউজকে বলেন, ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণির জন্য প্রতি বছর ১৩টি বই ছাপানো হলেও নতুন কারিকুলামে ১০টি বই রয়েছে। সে কারণে দুই স্তরে ছয়টি বই কমে গেছে। তার ওপর সারাদেশ থেকে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যে চাহিদা দেওয়া হয়েছে মাঠ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সেসব চাহিদা যাচাই-বাছাই করায় সেখান থেকে আরও কিছুটা কমেছে। সে কারণে ২০২৩ সালে প্রায় দুই কোটি বই কমে গেছে। আগামী বছর ৩৩ কোটি ২৭ লাখ ৭৮ হাজার ২০১টি বই ছাপানো হবে।
তিনি বলেন, এবার নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার জন্য বই ছাপানোর কাজ অনেক পিছিয়ে গেছে। তবে আমাদের হাতে এখানো তিন মাস সময় রয়েছে। আশা করি এ সময়ের মধ্যে সব বইয়ের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। পহেলা জানুয়ারির আগে দেশের সব স্থানে এসব বই পৌঁছে দেওয়া হবে।
এমএইচএম/এমআইএইচএস/জেআইএম