সেরেনাকে চমকে দিয়ে শিরোপা কারবারের
স্টেফি গ্রাফ কি হাত তুলে বসেছিলেন! সৃষ্টিকর্তাকে ডাকছিলেন মনে মনে! এই বুঝি তার ২২ গ্র্যান্ডস্লামের রেকর্ডে বসে গেলো কারও নাম! সেটা আপাতত জানা নেই। তবে প্রার্থনা করুক আর না করুক, স্টেফি গ্রাফের রেকর্ডটা আপাতত কিছুদিনের জন্য টিকে গেলো। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে উঠেও শিরোপা জিততে পারলেন না বিশ্বের নাম্বার ওযান তারকা মার্কিন কৃষ্ণকলি সেরেনা উইলিয়াস। তাকে হারিয়ে প্রথমবারেরমত কোন গ্র্যান্ড স্লামের শিরোপা জিতে নিলেন জার্মান টেনিস তারকা অ্যাঞ্জেলিক কারবার।
মেলবোর্ন পার্কে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে এই প্রথমবারেরমত উঠলেন অ্যাঞ্জেলিক কারবার। কিন্তু প্রতিপক্ষ যে তার অসীম শক্তির অধিকারী। নারীদের টেনিসে অবিসংবাদিত নাম। সেরেনা উলিয়ামস। তার সামনে যে কোন প্রতিপক্ষই উড়ে যায় খড়-কুটোর ন্যায়। মারিয়া শারাপোভার মত তারকাকে হারিয়ে উঠে এসেছেন ফাইনালে।
কিন্তু ইতিহাস কখনও কখনও নাম না জানা মানুষের হাতেও তৈরী হতে পারে। সেটাই দেখিয়ে দিলেন অ্যাঞ্জেলিক কারবার। ২ ঘণ্টা আট মিনিটের লড়াই শেষে ৬-৪, ৩-৬ এবং ৬-৪ সেটে সেই সেরেনা উইলিয়ামসকেই হারিয়ে দিলেন কারবার। প্রথমবারেরমত হাতে তুলে নিলেন কোন গ্র্যান্ড স্লামের শিরোপা।
শেষ সেটেই মঞ্চস্থ হয়েছিল অসাধারণ দৃশ্যটা। সেরেনা উইলিয়ামসের শট লাইনের বাইরে পড়তেই রেকেট ছেড়ে কোর্টেই সটান শুয়ে পড়লেন ৬ নাম্বার বাছাই অ্যাঞ্জেলিক কারবার। কয়েক মুহূর্ত কেটে গেলো। এরপরই উঠে দাঁড়ালেন। গিয়ে জড়িয়ে ধরলেন, যাকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ে ফেললেন, সেই সেরেনাকে। চোখে তখন আনন্দাশ্রু।
অপরদিকে রেকর্ডের কাছে গিয়েও শিরোপা অধরা থেকে যাচ্ছে সেরেনা উইলিয়ামসের। ইউএস ওপেনের শিরোপাও একইভাবেই হারিয়েছিলেন। তবে সেটা হয়েছিল সেমিফাইনালেই। ইউএস ওপেনজয়ী ইতালির ফ্লাভিয়া পানেত্তার প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক ইতালিয়ান রবার্তা ভিঞ্চির কাছে সেমিফাইনালে হেরে বিদায় নিয়েছিলেন সেরেনা। এবার তো উঠেছিলেন ফাইনালেও। কিন্তু স্টেফি গ্রাফের ২২টি গ্র্যান্ড স্লামের ছোঁয়া এখনও পাচ্ছেন না তিনি। সেরেনা এখনও পর্যন্ত জিতেছেন ২১টি গ্র্যান্ডস্লাম।
ম্যাচ শেষে সেরেনা বলেন, ‘সত্যিই টুর্নামেন্টে অসাধারণ খেলেছে অ্যাঞ্জেলিক কারবার। আর ফাইনালে তো খেলেছে পুরো টুর্নামেন্টেরই স্পেশাল ম্যাচ। শিরোপাটা আসলে তারই প্রাপ্য।’
শিরোপা জয়ী অ্যাঞ্জেলিক কারবার বলেন, ‘প্রথম রাউন্ডেই হোঁচট খেতে যাচ্ছিল (মিসাকি দইয়ের বিপক্ষে)। তখনই ভেবেছিলাম, একটা পা কি জার্মানিতে আগে থেকে পাঠিয়ে দেবো (কারণ, যে কোন সময়ই বিদায় হতে পারে, এই ভেবে)! কিন্তু এরপর যখন সুযোগ পেলাম, তখন সেটাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করলাম। শেষ পর্যন্ত আমরা স্বপ্নটা সত্যি হয়েই ধরা দিল অবশেষে।’
আইএইচএস/আরআইপি