স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ভোটারের স্বাক্ষর লাগবে না
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর জন্য সংশ্লিষ্ট ভোটারদের সমর্থনযুক্ত স্বাক্ষর নেয়ার বিধান বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই বিধান বাতিল করে ইতোমধ্যে খসড়া নির্বাচন বিধিমালা চূড়ান্ত করেছে। শনিবার নির্বাচন কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে আরো জানা যায়, এই বিধিমালা রোববার ভেটিঙের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে। পাশাপাশি দলীয়ভাবে অনুষ্ঠব্য এই নির্বাচনের আচরণ বিধিও চূড়ান্ত করেছে ইসি। আচরণ বিধি ভেটিঙের জন্য সোমবার আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানা যায়।
নির্বাচন কমিশন সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, প্রয়োজনীয় সংশোধনীর পর ইউপি নির্বাচন বিধিমালা বৃহস্পতিবার অনুমোদন করেছে ইসি। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থিতায় ভোটারদের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর তালিকা দেয়ার বিধান রাখা হয়নি। বাস্তবতা বিবেচনা করেই এ ধরনের শর্ত বাদ দেয়া হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, নবম ও দশম সংসদ নির্বাচন এবং সর্বশেষ পৌর নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থিতার শর্ত শিথিলের এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আগামীতে পৌর নির্বাচন বিধিমালায় ১০০ ভোটার ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনের তালিকা দেয়ার বিধান বাদ দেয়ার কথাও ভাবছে নির্বাচন আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠানটি।
প্রসঙ্গত, সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হতে আসনের এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনযুক্ত স্বাক্ষর তালিকা দিতে হয়। আর পৌরসভায় মেয়র পদে ১০০ ভোটারের স্বাক্ষর জমা দিতে হয়েছে।
ইউপিতে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীদের কোনো ধরনের শর্তারোপ না করার বিষয়ে ইসির যুক্তি তুলে ধরে সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, সাড়ে চার হাজার ইউপিতে স্বতন্ত্রপ্রার্থীদের জন্য কিছু ভোটারের স্বাক্ষরও যদি চাওয়া হয়, তা যাচাই করা কঠিন। রাজনৈতিকভাবে ভোটের সিদ্ধান্ত হওয়ায় দলীয়প্রার্থীকে দলের প্রত্যয়ন দিতে হবে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্য শর্ত দিলে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের মাত্র দুদিন সময় যথেষ্ট হবে না। তাছাড়া ভোটারের প্রকাশ্য সমর্থনযুক্ত স্বাক্ষর নেয়ায় গোপনীয়তা ক্ষুন্ন হচ্ছে কিনা তাও আলোচনার বিষয়।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, এসব ক্ষেত্রে কখনো কখনো ভুয়া সমর্থন তালিকা যেমন পাওয়া যায়, তেমনি অসতর্কতার কারণে অনেকের মনোনয়নপত্র বাতিলের ঘটনা ঘটেছে। পরে ইসিতে আপিল ও আদালতে গিয়ে অনেকে প্রার্থিতা ফিরেও পেয়েছেন।
নির্বাচনবিধি চূড়ান্ত
ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, চেয়ারম্যান পদে দলভিত্তিক ইউপি ভোট পরিচালনায় দলীয়প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়া, দলীয় ব্যয়, দলের ব্যয় রিটার্ন দিতে ব্যর্থ হলে নিবন্ধন বাতিল, প্রতীক বরাদ্দসহ প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে নির্বাচন বিধিমালার খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষে ইসি তাতে সম্মতি দিলে গেজেট করা হবে। বিধিমালা হাতে পেলে ফেব্রুয়ারিতে হবে তফসিল। তবে আচরণবিধি নিয়ে আরো পর্যালোচনা করে ১৯ জানুয়ারি কমিশন সভায় তা চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান সচিব।
এইচএস/এসএইচএস/পিআর