অধ্যক্ষের পদত্যাগ-এসএসসির রেজিস্ট্রেশন চেয়ে রাস্তায় শিক্ষার্থীরা
অধ্যক্ষের পদত্যাগ ও এসএসসি পরীক্ষা দিতে রেজিস্ট্রেশন নিশ্চিত করার দাবিতে বিক্ষোভ করছে রাজধানীর পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার মনিজা রহমান গালর্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের কয়েকশো শিক্ষার্থী।
দুই দফা দাবি নিয়ে রোববার (১৯ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বেলা সাড়ে ১১টায় এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন শুরু করে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এতে অভিভাবকদেরও অংশ নিতে দেখা গেছে।
সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কারণে প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তাসহ হাইকোর্ট, মৎস্য ভবন মোড় ও পল্টন এলাকার রাস্তায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলছেন, ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় এবারের এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে তারা। ২০২২ সালে ২৮০ জন ও ২০২৩ সালের ৩০০ জন এসএসসি শিক্ষার্থীর পরীক্ষা অনিশ্চয়তার মুখে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মনিজা রহমান গালর্স স্কুল অ্যান্ড কলেজে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় ২৮০ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ আগে শিক্ষার্থীরা জানতে পারে, তাদের রেজিস্ট্রেশন এখনো হয়নি। এজন্য প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ লুৎফুন নাহারকে দায়ী করছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলছে, লুৎফুন নাহার একসঙ্গে দুটি প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বলে তারা শুনেছেন। তবে এখনো তিনি দুই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে আছেন কি না, সেটি তাদের জানা নেই। বোর্ড থেকে অধ্যক্ষের পদত্যাগের কথা বলা হলেও তিনি পদত্যাগ করছেন না। বোর্ডও শিক্ষার্থীদের কোনো সহযোগিতা করছে না।
স্কুলটির রেজিস্ট্রেশন না পাওয়া এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী মেহজাবিন শুভা জাগো নিউজকে বলেন, সামনেই এসএসসি পরীক্ষা, আমরা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছি। অথচ এখন জানতে পারি রেজিস্ট্রেশনই হয়নি আমাদের। বোর্ডে যোগাযোগ করেছি। বোর্ড বলছে, প্রিন্সিপাল রেজিস্ট্রেশন করেননি।
ইভা আক্তার নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা প্রিন্সিপালের পদত্যাগ চাই। উনার কারণে আমাদের পরীক্ষা দেওয়া এখন অনিশ্চয়তায়। আমরা সবার সহযোগিতা চাই। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের অনেকের ভবিষ্যৎই হুমকিতে।
রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় সন্তানদের এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন অভিভাবকরাও। মীম নামের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোছা. নিলুফা আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, আমরা আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছি। তারা পরীক্ষা দিতে পারবে কি না, তা বুঝতে পারছি না। আমরা প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা চাই।
মো. মোস্তফা নামের আরেক অভিভাবক বলেন, সমস্যাটা বোর্ডের সঙ্গে প্রিন্সিপালের। প্রিন্সিপাল আমাদের সন্তানদের রেজিস্ট্রেশন করেননি। করোনার কারণে এমনিতেই পড়ালেখার ক্ষতি হয়েছে। অথচ এখন শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক হওয়ার পর শুনি অনেক পরীক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশনই হয়নি।
এদিকে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদের নিয়মিত বেতন না দেওয়া ও নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েও রয়েছে নানা অভিযোগ। স্কুলের শিক্ষকরা বলছেন, প্রিন্সিপাল শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনই করেনি। তিনি শিক্ষকদেরও বেতন আটকে রেখেছেন দু’মাস ধরে। আমরা কিছু বলতেও পারি না। নিয়োগ নিয়েও রয়েছে নানা অভিযোগ।
বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির কয়েকশো শিক্ষার্থীসহ অভিভাবক ও শিক্ষকরা অংশ নেন।
আরএসএম/এমকেআর/জেআইএম