স্যানিটেশনে ১২ বছরে ২৮ শতাংশ উন্নয়ন
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন জানিয়েছেন, বাংলাদেশ গত ১২ বছরে স্যানিটেশনে ব্যবস্থায় ২৮ শতাংশ উন্নয়ন করেছে। বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৬ষ্ঠ সাউথ এশিয়ান কনফারেন্স অন স্যানিটেশন (স্যাকোসান) এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০০৩ সালে এই হার ছিল ৩৩ শতাংশ। ২০১৫ সালে সেটি দাঁড়িয়েছে ৬১ শতাংশে। উন্মুক্ত স্থানে মল ত্যাগ কমে ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন করেছে।
তিনি আরো বলেন, দক্ষিণ এশিয়া দেশগুলোতে স্যানিটেশনে সুবিধা খুবই কম। এ কারণে এ অঞ্চলে শিশু মৃত্যুও হার অনেক বেশি। স্বাস্থ্যবান জাতি গঠনেও এটি অন্তরায় হিসেবে কাজ করছে।
স্যানিটেশনে বাংলাদেশে বিভিন্ন অগ্রগতি তুলে ধরে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার স্যানিটেশন ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়নের জন্য ১৫ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ২০১১ থেকে ২০২৫ সাল মেয়াদী এ পরিকল্পনায় পাঁচ বছর পর পর এর অগ্রগতিমূলক প্রতিবেদন প্রকাশের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে স্যানিটেশন ব্যবস্থাও রয়েছে। সেই দিক বিবেচনায় বাংলাদেশ সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, স্যানিটেশনে ব্যবস্থায় বাস্তব সমস্যাগুলো বিবেচনায় নিয়েই ঢাকা ঘোষণা করা হয়েছে। এরফলে ভবিষ্যতে সুস্বাস্থ্য ও নিরাপদ জীবন গঠনে নীতিনির্ধারণী কৌশল ঠিক করা সহজ হবে। আমি মনে করি এই সম্মেলনের মাধ্যমে যে সুপারিশ তৈরি হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন হলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে টেকসই, গুণগত সেনিটেশন এবং সুস্বাস্থ্যে সুনিশ্চিত করবে। শুধু ঘোষণা দিলেই শেষ হবে না, স্যাকোসানে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো সুপারিশমালা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করলেই ঢাকা ঘোষণা কার্যকর হবে।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, নিরাপদ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে টেকসই স্যানিটেশন অপরিহার্য। বহু প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এমডিজিতে পানির লক্ষ্যমাত্রা ও স্যানিটেশনে প্রায় শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। টেকসই স্যানিটেশন ব্যবস্থা গড়ে তোলা একটু কঠিন কাজ। কিন্তু এ চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে। তিনি নিরাপদ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত ও টেকসই স্যানিটেশন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ সমূহের সদস্যদের সমন্বিত প্রয়াস গ্রহণের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয় ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেক। সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, জাতিসংঘের প্রতিনিধি অ্যাডওয়ার্ড বিগবার্ডার, বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি প্যারামেসোয়ারান ল্যায়ার, সার্কের মহাসচিব অর্জুন বাহাদুর থাপা।
এছাড়া আফগান্তিান, ভুটান, ভারত, মালদীপ, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধিরা বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে ঢাকা ঘোষণা দেন বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার বিভাগের পলিসি সাপোর্ট ইউনিটের প্রকল্প পরিচালক কাজী আবদুল নূর।
১১ দফা ঢাকা ঘোষণার মধ্য দিয়ে এই অনুষ্ঠান শেষ হয়।
এএম/এসএইচএস/এমএস