শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৩০ পিএম, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
ফাইল ছবি

মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের কারণে প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকা দেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলবে। আগের ঘোষণা অনুসারেই নভেম্বরে এসএসসি ও ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে।

এ কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চাঁদপুর সদর উপজেলার মহামায়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘১২ সেপ্টেম্বর থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথা প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারবো। স্কুল-কলেজগুলো খোলার জন্য আমরা আগেই প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য ১২ সেপ্টেম্বর তারিখকে আমরা নির্ধারণ করেছি।’

তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও অ্যাসাইনমেন্ট প্রক্রিয়া চলমান থাকবে বলে জানান দীপু মনি। তিনি বলেন, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আসছে নভেম্বরের মাঝামাঝি এসএসসি ও ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা নিতে সরকার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বেশিরভাগ শিক্ষকই টিকা নিয়েছেন। এছাড়া ১২ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদেরও টিকার আওতায় আনা হবে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলকে শিক্ষামন্ত্রী জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আর বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সংক্রমণের হার কমতে শুরু করেছে। আগামী দিনে আরও কমবে। ফলে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যে ছুটি রয়েছে, তা আর বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না। ফলে আমরা চাইলে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারবো, যদি এর মধ্যে আর বড় কোনো সমস্যা না হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হলে সঠিক মনিটরিংও নিশ্চিত করা হবে।’

শিক্ষার্থীদের করোনা প্রতিরোধী টিকা দেওয়া প্রসঙ্গে ডা. দীপু মনি বলেন, ‘১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। টিকাপ্রাপ্তি সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে ১২ বছর বয়সী পর্যন্ত এ টিকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। এরই মধ্যে আমি স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যারা কর্মরত তাদের পরিবারের সদস্যদের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।’

গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব শনাক্ত হয়। ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য জানায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। মারণ ভাইরাসটির বিস্তার রোধে ওই বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। এরপর সংক্রমণ পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি না হওয়ায় দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো হয়। চলতি বছরের শুরুর দিকে সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে কয়েক দফা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নিলেও শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

গত ২৬ আগস্ট সবশেষ ঘোষণায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আরও এক দফা বাড়িয়ে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়। ওইদিন শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেশি বন্ধ রাখার সুযোগ নেই। স্কুল-কলেজ ও শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের চাপ রয়েছে, খুললেও করোনা আক্রান্তের আশংকা রয়েছে। সব মিলিয়ে আক্রান্তের হার ১০ শতাংশের নিচে নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে চাই।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের বৃহস্পতিবারের তথ্য অনুসারে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ, যা আগের দিন ছিল ১০ দশমিক ১১ শতাংশ।

এমএইচএম/এমকেআর/এইচএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।