লেভারকুসেনের মাঠে হোঁচট খেল বার্সেলোনা
মুদ্রার উল্টো পিঠ হয়তো দেখতে শুরু করে দিয়েছে বার্সা। মেসি-নেইমার-সুয়ারেজদের ঝড়ের মুখে ছাইয়ের মতো উড়ে যাচ্ছিল যেন প্রতিপক্ষ দলগুলো। কিন্তু লা লিগায় সপ্তাহের শুরুতেই ভ্যালেন্সিয়ার সঙ্গে ড্র করে হোঁচট খাওয়া শুরু কাতালানদের। ধারাবাহিকতাটা ধরে রাখলো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে এসেও। জার্মান ক্লাব বায়ার লেভারকুসেনের মাঠে গিয়ে ১-১ গোলে ড্র করে আসলো লিওনেল মেসিদের দল।
ইনজুরির কারণে এই ম্যাচে দলে ছিলেন না নেইমার। সেরা একাদশে লুইস সুয়ারেজকেও রাখলেন না কোচ লুইস এনরিকে। শেষ ষোল নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার কারণেই সম্ভবত এই ম্যাচে দল নিয়ে কিছু পরীক্ষা-নীরিক্ষা চালিয়েছিলেন কোচ। সার্জি সাম্পার, উইলফ্রিড ক্যাম্পটন, মুনির এল হাদ্দাদি কিংবা সান্দ্রো র্যামিরেজের মত ফুটবলারদের দিয়েই একাদশ সাজান কোচ।
বে এরেনাতে অবশ্য এমন একাদশ সাজানোর সাহসটা ছিলই বার্সা কোচের। কারণ, গ্রুপ চ্যাম্পিয়নশিপও আগে নিশ্চিত হয়ে গেছে তাদের। এ কারণে দল নিয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষার সুন্দর সুযোগটা মিস করতে চাইলেন না তিনি। অপরদিকে বায়ার লেভারকুসেনের সামনে ছিল জীবন-মরণ সমস্যা। দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে হলে এই ম্যাচ জিততেই হবে তাদের।
কিন্তু; বার্সেলোনার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করার কারণে স্বপ্নপুড়ে ছাই হয়ে গেলো লেভারকুসেনের। ‘গ্রুপ’ ই থেকে ১৪ পয়েন্টপ নিয়ে শীর্ষস্থানে রইল বার্সেলোনাই। ৬ পয়েন্ট করে নিয়ে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় হলো যথাক্রমে এএস রোমা এবং লেভারকুসেন। পয়েন্ট সমান হলেও দু’দলের হেড-টু হেড বিবেচনায় এগিয়ে থাকলো লেভারকুসেনই।
তবে, লেভারকুসেন বেশ চেষ্টা করেছিল জয়টা তুলে নেয়ার। বার্সা গোল পোস্টে মার্ক অ্যান্ডর টার স্টেগান থাকার পরও তারা ব্যর্থ হলো দ্বিতীয় গোলটি করতে। খেলার প্রথম আধ ঘন্টার মধ্যেই অবশ্য গোল পেয়ে গিয়েছিল দু’দল। দুই মিনিটের ব্যবধানেই শেষ ম্যাচের সব আকর্ষণ।
খেলার ২০ মিনিটেই গোল করে বার্সাকে এগিয়ে দিয়েছিলেন লিওনেল মেসি। লেভারকুসেনের জমাট রক্ষণ ভেদ করে দুর্দান্ত একটি পাস দিয়েছিলেন ইভান র্যাকিটিক। বলটা পেয়েই ডি বক্সের মধ্যে দুর্দান্ত হয়ে ওঠেন মেসি। স্বাগতিক দলের ডিফেন্ডার বোর্গাস ওয়েন্ডেল চেষ্টা করেও পারলেন না মেসির কাছ থেকে বলটি ক্লিয়ার করতে। বরং নীচু এক কোনাকুনি শটে লেভারকুসেন গোলরক্ষক বার্ড লিনোকে পরাস্ত করেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা।
দুই মিনিট লিডটা ধরে রাখতে পেরেছিল বার্সা। খেলার ২৩তম মিনিটেই তাদের সেই গোলটি শোধ করে দেন লেভারকুসেনের মেক্সিকান স্ট্রাইকার হ্যাভিয়ের হার্নান্দেজ। অ্যাডমির মোহামেদি বল নিয়ে উঠে আসেন বার্সার ডিফেন্স লক্ষ্যে। পাস দেন হাকান চালহঙলুকে। তিনি আলতো টোকায় পাস করে দেন হ্যাভিয়ের হার্নান্দেজের কাছে। দুর্দান্ত শটে বার্সা গোলরক্ষক টার স্টেগানকে পরাস্ত করেন হ্যাভিয়ের।
প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগে বেশ কয়েকবার লিড নেয়ার সুযোগ পেয়েছিল বার্সেলোনা। তবে মেসিকে আটকে দিয়ে বার্সার আক্রমণ ঠেকিয়েছে লেভারকুসেন। এরই ফাঁকে ২৫ গজ দুর থেকে একটি দুর্দান্ত শট নেন চালহঙলু। কিন্তু টার স্টেগান দারুন ক্ষিপ্রতায় সেটা ঠেকিয়ে দেন।
দ্বিতীয়ার্ধে জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে লেভারকুসেন। বার্সা রক্ষণের ওপর বেশ চাপ সৃষ্টি করে তারা; কিন্তু চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে দিল ব্যর্থতার পরিচয়। বার্সেলোনাও আর পারলো না তাদের লিড বাড়াতে। সুতরাং, শেষ পর্যন্ত পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই মাঠ ত্যাগ করতে হলো দু’দলকে।
আইএইচএস/পিআর