অনুদানের অর্থ পাননি এক লাখ ৩৬ হাজার নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী
ঈদুল ফিতরে উপহার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া অনুদানের ৭৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা পাননি নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা। গত দুই মাস আগে এ অর্থ ছাড় দেয়া হলেও এখনো তা পৌঁছায়নি।
অর্থ ছাড়ের এক সপ্তাহের মধ্যে এ অনুদানের টাকা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে তাদের কাছে পৌঁছে দেয়ার কথা থাকলেও তা স্থবির হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। এসব প্রত্যেক শিক্ষককে মাথাপিছু পাঁচ হাজার টাকা এবং কর্মচারীরা আড়াই হাজার টাকা করে পাওয়ার কথা ছিল।
জানা গেছে, শিক্ষকদের জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকা, থাকলেও পরিচয়পত্রে ভুল, টাকার পাওয়ার জন্য যে মোবাইল নম্বর দিয়েছেন সেটির সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের মিল না থাকায় অনুদানের এ টাকা পাননি এক লাখ ৩৬ হাজার ৮৭৭ জন শিক্ষক-কর্মচারী। ফলে ৮২ শতাংশ শিক্ষক-কর্মচারী অনুদানের এ টাকা এখনো পাননি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, যে এক লাখ ৬৭ হাজার ২২৫ জন শিক্ষক-কর্মচারীর এই অনুদান পাওয়ার কথা, তার মধ্যে ২৮ জুন পর্যন্ত স্কুল-কলেজের ১০ হাজার ৫৭৯ জন শিক্ষক, দুই হাজার ৩১৫ জন কর্মচারী অনুদান পেয়েছেন। কারিগরিতে ৯১ জন শিক্ষক এবং ৯৮ জন কর্মচারী এ অনুদানের টাকা পেয়েছেন।
মাদরাসা অধিদফতরের দাবি, ৩০ জুন পর্যন্ত ১৭ হাজার ২৩৫ জন শিক্ষক-কর্মচারী এ অনুদানের টাকা পেয়েছেন। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় মাদরাসা বিভাগের এ সংখ্যা আরও কম হতে পারে। সব মিলিয়ে এক লাখ ৬৭ হাজার ২২৫ জনের মধ্যে মাত্র ৩০ হাজার ৩৪৮ জন অনুদানের টাকা পেয়েছেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এই এক লাখ ৩৬ হাজার ৮৭৭ জন শিক্ষক-কর্মচারীর সহায়তা পাওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে।
শিক্ষকরা জানান, অনুদানের এ টাকা নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে তা সমাধানযোগ্য নয়। শিক্ষা ও অর্থ মন্ত্রণালয় পারে গত বছরের মত শিক্ষকদের টাকা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠাতে।
তারা জানান, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয়ের। কারণ সুবিধাভোগীদের টাকা সরাসরি মোবাইলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত তারাই নিয়েছেন।
শিক্ষকরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, থাকলেও নানা ভুল, আবার অনেকেই মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট খুলতে আগ্রহী নয়। ফলে বিকাশ ও নগদ অ্যাকাউন্ট না থাকা এ শিক্ষক-কর্মচারীরা পরিচিত অন্য কারো অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়েছেন। এসব নম্বরে টাকা পাঠাতে গিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় দেখে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ব্যবহৃত নামের সঙ্গে ওই শিক্ষক-কর্মচারীদের নামের মিল নেই।
জানতে চাইলে মাদরাসা অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ আবু নঈম বলেন, ‘আমরা শুধু শিক্ষকদের ডাটাবেজ এন্ট্রি দিচ্ছি। এন্ট্রি দিতে গিয়ে অনেক শিক্ষকদের জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে তাদের তথ্যে মিল পাওয়া যাচ্ছে না। যাদের তথ্যে মিল পাওয়া যাচ্ছে না তাদেরটা এন্ট্রি দেয়া যাচ্ছে না। যেগুলো পাওয়া যাচ্ছে না তা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘তারা টাকা পাবেন কি সেটা শিক্ষা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে সিদ্ধান্তের বিষয়। আমাদের কাজ শুধু শিক্ষক-কর্মচারীদের তথ্য এন্ট্রি দেয়া।’
এমএইচএম/জেডএইচ/জেআইএম