বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে গিয়ে ভুঁড়িভোজ!


প্রকাশিত: ০৮:১৯ পিএম, ২৩ নভেম্বর ২০১৫

ঝালকাঠির রাজাপুরের গালুয়া এসকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণি ছাত্রী হাবিবা আক্তার আমাতুলের (১৪) বিয়ের আয়োজন চলছে বাড়িতে। বাবুর্চি এনে বিয়ের রান্নার পাশাপাশি গান-বাজনাও চলছিল। বর পক্ষের ২৫ জন অতিথি দুই গাড়িতে কনের বাড়ি এসেছে। বিয়ের সব আয়োজন চূড়ান্ত।

তখন বাল্যবিয়ের এ খবর রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেনে বিয়ে বন্ধ করার জন্য থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। পুলিশও ওই বিয়েতে হাজির হন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে বাল্যবিয়ে বন্ধ বা কাউকে আটক না করে খোদ রাজাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাইউম ও সহকারী উপ-পরিদর্শক মাইনুল ভুঁড়িভোজ করে তৈলখরচ (ঘুষ) নিয়ে থানায় ফিরে আসেন।

সোমবার দুপুরে রাজাপুরের পশ্চিম পুটিয়াখালী গ্রামের বেগ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানা যায়, পশ্চিম পুটিয়াখালীর আলমগীর বেগ সোমবার তার নিজ বাড়িতে মেয়ে হাবিবা আক্তার আমাতুলের সঙ্গে কাঁঠালিয়ার নাছির ফরাজির (৩২) বিয়ের আয়োজন করেন। স্থানীয়রা বাল্যবিয়ের বিষয়টি ইউএনও এবিএম সাদিকুর রহমানকে জানালে তিনি বিয়ে বন্ধের জন্য থানা পুলিশকে নির্দেশ দিলে এসআই আব্দুল কাইউম ও এএসআই মাইনুল ইসলাম বিয়ে বাড়িতে গিয়ে বিয়ে বন্ধ না করে উল্টো বর পক্ষের সঙ্গে বিয়ের খাবার খেয়ে অনুষ্ঠান ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে এসআই আব্দুল কাইউম বলেন, ‘আমি বিয়ে বাড়িতে গিয়ে বর ও কনে কাউকেই পাইনি। তাই বিয়ে বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। তবে ভুঁড়িভোজের বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।’

রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম সাদিকুর রহমান বলেন, ‘বাল্যবিয়ে যাতে না হয় সে জন্য পুলিশ গিয়ে ওই স্কুলছাত্রীকে স্থানীয় ইউপি সদস্য আফজাল হোসেনের জিম্মায় দিয়ে এসেছে পুলিশ।’

গালুয়া ইউপির ৪নং ওয়ার্ড মেম্বর আফজাল হোসেন বলেন, ‘আমি বিয়ের বিষয়ে কিছুই জানি না। বিয়েতে দাওয়াতও পাইনি। ওই মেয়ের যাতে বিয়ে না হয় সেজন্য দুপুরে পুলিশ স্যারেরা আমাকে ডেকে খেয়াল রাখতে বলেছেন।’

তবে দুই গাড়িতে বরযাত্রার লোকজন এসে খেয়ে দেয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।

মো. আতিকুর রহমান/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।