টাঙ্গাইলে বিএনপির একক : আ. লীগের প্রার্থী নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব


প্রকাশিত: ০৫:৫৫ এএম, ১৬ নভেম্বর ২০১৫

টাঙ্গাইল জুড়ে পৌর নির্বাচনের আমেজ বইতে শুরু করেছে। নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসতে না আসতেই প্রার্থীদেরও প্রস্তুতির  তোড়জোড় শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই পাড়া মহল্লায় বসছে নির্বাচনী সভা সমাবেশ। প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পাওয়া টাঙ্গাইল পৌরসভার আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে এখন পর্যন্ত মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দুইজন এবং বিএনপির একজন প্রার্থী প্রচারনা চালাচ্ছেন।

জানা গেছে, ২৯.৩৪ বর্গকিলোমিটার আয়তন ও ১৮টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত টাঙ্গাইল পৌরসভা। ২০১১ সালের আদমশুমারি তথ্য অনুযায়ী এ পৌর এলাকার লোক সংখ্যা এক লাখ সাতষট্টি হাজার চার’শ বার জন। মোট ভোটার সংখ্যা চুরানব্বই হাজার ছয়’শ চুয়াল্লিশ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ছয়চল্লিশ হাজার এক’শ ত্রিশ ও নারী ভোটার আট চল্লিশ হাজার পাঁচ’শ চৌদ্দ জন। হালনাগাদ ভোটার নিয়ে নতুন ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ পঁচিশ হাজার।

সরেজমিন ও ওয়ার্ডবাসীর দেয়া তথ্য মতে, মহাজোট নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মেয়র পদ প্রার্থী মনোনয়নসহ জোড় প্রচারনা শুরু করেছেন দুইজন। এর মধ্যে টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল হক আলমগীর। তিনি দীর্ঘদিন রাজনীতি করার ফলে দলের তৃণমূল পর্যায়ে ব্যাপক জনপ্রিয় এক ব্যক্তিত্ব। দলের আন্দোলন সংগ্রামসহ বিভিন্ন চড়াই উতরায়েও দলচ্যুত না হয়ে নিবেদিত এক রাজনীতিবিদ হিসেবে দলে অবস্থান করছেন তিনি।

আওয়ামী রাজনৈতিক পরিবারের সকল মহলে এজন্য তিনি এক ব্যক্তিত্ববান রাজনীতিবিদের পাশাপাশি গ্রহণযোগ্য প্রার্থী বলেও বিবেচিত। গত পৌর নির্বাচনে দলে দুইজন প্রার্থী হওয়ায় মনোনয়ন সিদ্ধান্তে পৌর ওয়ার্ডের ১৮টি কমিটিকে নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ের নির্বাচন হয়। সে সময়ে তৃণমূলের সামান্য কিছু ভোটের ব্যবধানে সাবেক পৌরসভার মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির সঙ্গে পরাজিত হয়ে তিনি মনোনয়ন বঞ্চিত হন। আওয়ামী লীগের পৌর মেয়র পদের মনোনয়ন দৌড়ে তৃণমূল নেতাকর্মীর সর্বোচ্চ সমর্থন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে তার বলে দাবি করেছেন সিরাজুল হক আলমগীরের সমর্থকরা।

অপরদিকে আওয়ামী লীগের মনোয়ন ও প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার চেষ্টায় রয়েছেন সদ্য টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগে যোগদানরত টাঙ্গাইল পৌরসভার দুইবারের নির্বাচিত সাবেক মেয়র জামিলুর রহমান মিরন। সদ্য দলে যোগদান করায় তৃণমূল আওয়ামী লীগে ততটা জনপ্রিয় হয়ে উঠতে না পারলেও সাধারণ মানুষের কাছে তার জনপ্রিয়তা রয়েছে। এর ফলে শহরের কয়েকটি বিশেষ বিশেষ এলাকায় তার ভোট ব্যাংক তৈরি হওয়ায় তার মেয়র পদ পাওয়া ও বিজয়ী হওয়ার সর্বোচ্চ সুযোগ রয়েছে বলে দাবি করেছেন তার সমর্থকরা।

বিএনপির প্রার্থী হিসেবে জোড় প্রচারনায় নেমেছেন টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাফর আহমেদ। একক প্রার্থী হওয়ায় তৃনমূল বিএনপি ও বিশ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা তার গণসংযোগে অংশগ্রহণ করছে। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়াসহ দলের একক প্রার্থী হওয়ার ফলে তিনি সরাসরি ধানের শীষ মার্কায় ভোট প্রার্থণা ও প্রচারনা করায় সাধারণ জনগণের মধ্যে তার অবস্থান সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সাংবাদিক, আইনজীবী ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ খ্যাত অ্যাডভোকেট জাফর আহমেদ দলের পাশাপাশি পৌর এলাকার সুশীল সমাজ, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাহিত্যিকসহ সাংস্কৃতিক মহলেরও এক গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্বও বলে দাবি তার সমর্থকদের।

টাঙ্গাইল পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের পরপর দুইবার নির্বাচিত কাউন্সিলর ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব সাফল্যের সঙ্গে পালনের ফলে পৌর প্রশাসন পরিচালনায় বলিষ্ট অবস্থানে রয়েছেন অ্যাডভোকেট জাফর আহমেদ। পেশাগত পরিচিতি, একক প্রার্থী, ব্যক্তি ও দলগত ভোটার অবস্থান থেকে টাঙ্গাইল পৌরসভা নির্বাচনের প্রচারনায় এগিয়ে রয়েছেন বলে দাবি করেছেন বিএনপির প্রার্থী অ্যাডভোকেট জাফর আহমেদ।

ইতোমধ্যেই ১৮টি ওয়ার্ডে পুরুষ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের ৬জন মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী আওয়ামী লীগে অনেকটাই চুড়ান্ত হলেও বিএনপি এ সকল প্রার্থী মনোনয়নে পিছিয়ে থাকায় কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিজয়ে অনেকটাই সমস্যায় পড়বে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা বলে মনে করছেন দলের সমর্থক ও সাধারণ ভোটাররা। প্রাথমিক জরিপে দেখা যায়, এবারের পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী যেই হোক না কেন তার সঙ্গেই বিএনপির প্রার্থী অ্যাডভোকেট জাফর আহমেদের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।

এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।