নিয়োগ বন্ধের পরিপত্র শিক্ষানীতির বাইরে নয়


প্রকাশিত: ০২:২৬ পিএম, ১৫ নভেম্বর ২০১৫

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধের পরিপত্র জারি করা শিক্ষানীতির বাইরে নয় বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। রোববার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদের বৈঠকে ৩০০ বিধিতে দেওয়া এক বিবৃতিতে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা শিক্ষানীতির বাইরে কোন কিছুই করি নাই। যা আপনারা সংসদে আইনের মাধ্যমে পাস করে দিয়েছেন তাই আমরা কার্যকর করছি মাত্র। যদি আমাদের কোনো ভুল ক্রটি থাকে তাহলে অবশ্যই আপনারা দেখবেন এবং সে অনুসারে ব্যবস্থা নেবেন।

এর আগে কয়েকটি কার্যদিবসে বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রীর সমালোচনা করে বক্তব্য দেন। এসব বক্তব্যের জবাবে তিনি আরো বলেন, আমি আর কথা বাড়াতে চাই না। আমি আশা করি, আমরা শিক্ষানীতির মধ্যেই আছি। এটাই আমাদের সরকারের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যই আমরা অর্জন করতে চাই।

শিক্ষানীতির ফাইলটি হাতে নিয়ে সাংসদদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, "আশা করি, আপনারা একবার এই ফাইলটা পড়বেন এবং দেখবেন।"

স্পীকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মাননীয় স্পীকার আপনি অনুমতি দিলে ফাইলটি আপনার কাছে পাঠাতে চাই।

উত্তরে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, মাননীয় মন্ত্রী আপনি ফাইলটি পাঠাতে পারেন।

নরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, শিক্ষানীতিতে রয়েছে- সরকারি কর্মকমিশনের আদলে একটি বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ কমিটি গঠন করা হবে। শিক্ষানীতিতে যা উল্লেখ করা আছে আমরা হুবহু তা বাস্তবায়ন করছি। এই নীতিটি জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। আপনাদের সবার অনুমোদনক্রমেই এটা হয়েছে। এটা কাউকে বঞ্চিত করার জন্য নয়, বরং শিক্ষানীতির বাস্তবায়নেরই একটি পর্যায়।

তিনি আরো বলেন, পিএসসির অনুরূপ যে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে তা ভালো শিক্ষক নিয়োগের জন্যই করা হয়েছে। আপনারা যদি শিক্ষানীতিটা পড়েন, আশা করি এটা নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকবে না। শিক্ষার মান বৃদ্ধিতে ভালো শিক্ষকের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ ভালো শিক্ষকই ভালো ছাত্র তৈরি করতে পারে। ভালো মানের শিক্ষার জন্য স্কুল, কলেজ বা বই খাতা না থাকলেও চলে, কিন্তু ভালো শিক্ষক না থাকলে চলে না। আর আমরা ভালো শিক্ষক নিয়োগের বিষয়েই গুরুত্ব দিয়ে এটা করেছি।

জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন ৬২-র শিক্ষা আন্দোলনের একটি দাবি ছিল উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের দাবি ছিল একটি জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রণয়নকৃত সেই খসড়া শিক্ষানীতি যখন জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছিল তখন কেউ এর বিরোধীতা করেন নাই। এমনকি কোনো ব্যক্তি বা দলও এটিতে দ্বিমত পোষণ করেন নাই। ফলে সকলের সম্মতিক্রমে এটা অনুমোদন হয়েছে। সেই শিক্ষানীতির ওপর ভর করেই বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে।

সংসদ সদস্যদের আপত্তির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সকল সংসদ সদস্য মিলে বর্তমানে সর্বোচ্চ ৩ হাজার শিক্ষপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে রয়েছেন। কিন্তু মোট বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৩৬ হাজার ৭১টি। তাহলে বাকি যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলোর সভাপতি অন্যরা। আমরা যেটা করেছি সেটা কাউকে বাতিল করার উদ্যেশ্যে নয়। শিক্ষার গুনগত মান বৃদ্ধির লক্ষেই এটা করা হয়েছে।  

`শিক্ষামন্ত্রী জবাবদিহিতার ভয়ে সংসদ থেকে পালিয়ে গেছেন` -সংসদ সদস্যদের এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে করতে ৬টা বেজে যায়। আর মন্ত্রণালয়ের কাজ শুরু করতে হয় ৬টা থেকে। ১০টার পর বাসায় ফিরি। আসলে আমি ওই দিন কাজের জন্যই গিয়েছিলাম। এ বিষয়ে কেউ কেউ বলেছেন আমি নাকি পালিয়ে গেছি।

এইচএস/আরএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।