নগদে যাবে প্রাথমিকের উপবৃত্তির টাকা
প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে নতুন উদ্যোগ নিচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)। এখন থেকে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ‘নগদ’-এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে ডিপিই।
অধিদফতর বলছে, অন্যান্য মাধ্যমে টাকা পাঠাতে দীর্ঘসূত্রিতা সৃষ্টি হয়। নগদের মাধ্যমে পাঠালে শিক্ষার্থীদের টাকা সরাসরি তাদের একাউন্টে চলে যাবে এবং তারা যখন ইচ্ছা তখন তুলে নিতে পারবে। এর জন্য খরচও কমে যাবে।
জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে ‘শিউরক্যাশ’ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সেবার মাধ্যমে এই উপবৃত্তির টাকা দেয়া হচ্ছিল। তবে ক্যাশ আউট চার্জ ও ডেটা ম্যানেজমেন্টের জন্য এক হাজারে সব মিলিয়ে সাড়ে ২১ টাকা তাদেরকে দিতে হত সরকারকে। তবে ‘নগদ’ হাজারে মাত্র সাড়ে সাত টাকায় পুরো সেবা দেবে।
ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তির টাকা ক্যাশ আউটের জন্য সরকারের কাছ থেকে বৃত্তির মোট টাকার ওপরে ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ অর্থাৎ এক হাজারে সাড়ে আঠারো টাকা পেত শিওরক্যাশ। এর সঙ্গে ডেটা প্রসেসিংয়ের জন্যে হাজারে আরও ৩ টাকা চার্জ রাখত তারা। অথচ পুরো এই সেবাটি ‘নগদ’ করে দেবে হাজারে সাড়ে সাত টাকায়। তবে ক্যাশ আউটের জন্য বাড়তি যা লাগে সেটা ‘নগদ’ নিজেদের ফান্ড থেকে দিবে। নতুন এই চুক্তির আওতায় গত এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর মাসের উপবৃত্তিও ‘নগদ’ বিতরণ করবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের তথ্যমতে, প্রতি বছর প্রাথমিক পর্যায়ের এক কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থী এই প্রক্রিয়ায় উপবৃত্তি পেয়ে থাকে। তাতে সব মিলে সরকারের প্রায় চার হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় দুটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়ে সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছিল। তাদের প্রস্তাবে ওপেন টেন্ডার ম্যাথড বা ওটিএম পদ্ধতিতে ‘নগদ’ কে দেয়ার প্রস্তাব করা হয়। তখন সরকারি প্রতিষ্ঠান বিবেচনায় ‘নগদ’-কে কাজটি দিতে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, শিউরক্যাশের মাধ্যমে উপবৃত্তি বিতরণ করতে গিয়ে গত তিন বছরে তারা অসংখ্য অভিযোগ পেয়েছেন। তার মধ্যে ক্যাশ আউটের জন্য পর্যাপ্ত এজেন্ট পয়েন্ট না থাকা বা এজেন্টরা শিক্ষার্থীদের থেকে বাড়তি টাকা রেখে দেয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
বর্তমানে প্রাথমিক ও প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা জনপ্রতি ৭৫ এবং প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১৫০ টাকা পর্যন্ত বৃত্তি পাবে। এর আগে প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিশুদের জন্য ৫০ টাকা এবং প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা পেত ১০০ টাকা।
জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মোহাম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমাদের এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা এখন থেকে অর্থ প্রদান করব। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা বকেয়া অর্থ নগদের মাধ্যমে পরিশোধ করব।’
এমএইচএম/এআরএ/পিআর