সরকারের নীতির কারণে ব্লগার হত্যাকারীদের উত্থান : মওদুদ
সরকারের নীতির কারণে ব্লগার হত্যাকারী ও জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থয়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। শনিবার জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনাতনে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মওদুদ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ব্লগার হত্যা ও জঙ্গিবাদ উত্থান হয়েছে সরকারের মননের কারণে। হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপিকে দোষারোপ করলে দেশে জঙ্গিবাদ আরো বেড়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, আমার মনে হয় দেশে এখন ৭৪ সালের আগের অবস্থা ফিরে গেছে। কেবল একটি দলই দেশে রাজনীতি করবে, বর্তমান সরকার সংবিধান নিয়ে এমন কৌশল করেছে। গণতন্ত্র না থাকা ও একদলীয় শাসন বজায় থাকলে জঙ্গিবাদের উত্থান থাকবে এবং এ ধরণের ঘটনা আরো ঘটতে থাকবে।
মওদুদ আহমেদ বলেন, বিএনপি একটি উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। এই দল জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসকে ঘৃনা করে। যে কোনো ধরণের জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বিএনপির অবস্থান থাকবে। তবে ঘটনার পর বিএনপিকে দোষারোপ করলে আসল অপরাধিরা পার পেয়ে যাবে এবং তারা উৎসাহিত হবে। এভাবে ব্লেইম গেইম করা ঠিক না।
গত দুই সপ্তাহের মধ্যে কয়েকজন পুলিশ মারা গেলেও কোনো তথ্য উদঘাটন করতে পারেনি। এর কারণ হলো পুলিশকে তাদের দায়িত্ব থেকে সরে রাখা হয়েছে, তাদের যেন একমাত্র কাজ দেওয়া হয়েছে বিএনপিকে দমন করার জন্য। মওদুদ বলেন, আজকের সহিংসতা ও জঙ্গিবাদকে রুখে দিতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এটা জাতীয় সমস্যা। আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান দরকার। আসুন সবাই মিলে আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করি। সমস্যার সমাধানের জন্য বিএনপি সব সময় সাহায্য করতে প্রস্তুত রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আলোচনা বসার জন্য সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে। রাজনীতি আর রাজনীতিবিদদের হাতে নেই, রাজনীতি আজ পয়সা ওয়ালাদের হাতে চলে গেছে বলেও মন্তব্য করেন ব্যারিস্টার মওদুদ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আ স ম হান্নান শাহ বলেন, ৭ নভেম্বর সিপাহী বিপ্লব দিবস। সেই দিন সিপাহীরা জিয়াউর রহমানের জন্য ব্যারাক থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন, ওই বিপ্লবের সঙ্গে দেশের জনগন যোগ দিয়েছিলেন। সেই সময় জাসদের গুপ্তহত্যা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে দেশের জনগণ প্রত্যাহার করেছিল, আর মেজর জিয়াকে গ্রহণ করেছিল। অতিতে জাসদের বৈজ্ঞানীক সমাজতন্ত্র স্থান পায়নি, ভবিষতেও আর পাবে না বলে মন্তব্য করেছন তিনি।
সরকারের বাঁধার কারণে দিবসটি উপলক্ষে আর কোনো আলোচনা সভার আয়োজন করা যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজ আইজীবীরা এই আলোচনা সভার আয়োজন করেছেন, সেই জন্য তাদের ধন্যবাদ জানায়। আমাদের উপরেও আরো বিপদ আসবে, আইনজীবীরা অতিতে আমাদের সেবা দিয়ে গেছেন, আশা করি ভবিষতেও আরো সেবা দিয়ে যাবেন।
সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্র তৈরি করে গেছেন জিয়াউর রহমান। আজকে যারা দেশের উন্নয়নের বড়াই করেন, এ সব কিছুরই অবদান জিয়াউর রহমানের। দেশে যতদিন উন্নয়ন হবে, ততদিন শহীদ জিয়াকে স্মরণ করতে হবে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের সভাপতিত্বে সভায় খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন, বিএনপির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়া, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এফএইচ/এএইচ/আরআইপি