পদ্মভূষণ ফিরিয়ে দেবেন বিজ্ঞানী পিএম ভার্গব
লেখক-কবি, চলচ্চিত্রকারদের পর এবার বিজ্ঞানী। ভারতে ‘অসহিষ্ণুতা বেড়ে চলার প্রতিবাদে’ ‘পদ্মভূষণ’ খেতাব ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিখ্যাত বিজ্ঞানী পুষ্প মিত্র ভার্গব। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে দেখা করে তার হাতেই ওই খেতাব ফিরিয়ে দেবেন বলে ভার্গব সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে ভার্গব বলেন, ভারতে ভিন্নমতের স্থান সংকুচিত হতে থাকায় তাকে পুরষ্কার ফিরিয়ে দেয়ার এই সিদ্ধান্ত নিতে উদ্বুদ্ধ করেছে। তিনি বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিয়ে যা চলছে তার প্রতিবাদ করা উচিত। একজন শিল্পী তার কাজের মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ জানাতে পারেন। কিন্তু আমি বিজ্ঞানী। তাই আমার প্রতিবাদ জানানোর একমাত্র উপায় পুরস্কার ফিরিয়ে দেয়া।’
‘সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি’ (সিসিএমবি)-ও প্রতিষ্ঠাতা ও অধিকর্তা ভার্গব বলেছেন, ‘ধর্মীয় বিশ্বাস একেবারেই ব্যক্তিগত। তার রাজনীতিতে ঢুকে পড়া মোটেই কাম্য নয়। অথচ, এ দেশে গণতন্ত্রের পক্ষে এখন যা সবচেয়ে বেশি আশঙ্কার হয়ে উঠেছে, তা হল হিন্দুত্বের প্রচার ও প্রসার।’
৮৭ বছর বয়সী বিজ্ঞানী ভার্গব নারীদের নিয়ে আরএসএস প্রধান মোহন ভগবতের সাম্প্রতিক মন্তব্যেরও কড়া সমালোচনা করেছেন। ভগবত বলেছিলেন, ‘নারীদের ঘরকন্না সামলানোর দায়িত্বের মধ্যেই বেঁধে রাখা উচিত নিজেদের।’ বিজ্ঞানী ভার্গবের মতে, ‘ওই মন্তব্য মোটেই রুচিশীল নয়।’
এদিকে কালবুর্গি হত্যা, এফটিআইসহ ভারতে ঘটে সাম্প্রতিক নানা ঘটনার প্রতিবাদে চিত্র পরিচালক দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়সহ দশ চিত্র পরিচালক জাতীয় পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়েছেন। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন চলচ্চিত্র পরিচালক আনন্দ পট্টবর্ধন।
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবেশ ক্রমশই অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে, বলে অভিযোগ করেন তিনি। সাধারণ মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপরেও জোর দেন অন্য পরিচালকরাও।
অসহিষ্ণুতার প্রতিবাদে এর আগে ছয়জন সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়েছেন। সাহিত্য একাডেমির পক্ষ থেকেও কালবুর্গি হত্যার কড়া নিন্দা করা হয়।
মঙ্গলবার দিল্লীর কেরল হাউসে গোমাংস নিয়ে পুলিশি তৎপরতার প্রতিবাদে সরব হয় গোটা ভারত। এছাড়া অসহিষ্ণুতার প্রতিবাদে ১৩৫ জন জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী অনলাইনে দেশটির রাষ্ট্রপতিকে একটি পিটিশন জমা দিয়েছেন।
বিএ