ঢাকার ভালো শিক্ষকদের ক্লাস গ্রামে ছড়িয়ে দেবে শিক্ষা টিভি
ঢাকার ভালো শিক্ষকদের ক্লাস গ্রাম পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য শিক্ষা টিভি স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানালেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনে তিনি এ পরিকল্পনার কথা জানান।
সোমবার (১৫ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় অধিবেশন শেষে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের এ কার্যঅধিবেশন হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এতে সভাপতিত্ব করেন।
নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের অতিথি শিক্ষক হিসেবে গ্রাম পর্যায়ে শিক্ষা প্রদান ও একটা বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের চাওয়া ডিসিদের ছিল- এসব বিষয়ে কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়টা প্রক্রিয়ার ব্যাপার। এ বিষয়ে প্রস্তাব এলে আমরা ভেবে দেখব কী করা যায়।’
‘এছাড়া ঢাকাসহ দেশের বেশকিছু স্থানে অত্যন্ত ভালোমানের বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়েও অনেক সুনাম রয়েছে। তাদের অতিথি শিক্ষক হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষা প্রদানের একটা প্রস্তাব রয়েছে। তবে আমরা যেটা বলেছি যে, তার চেয়ে বরং খুব কম খরচে সব বিদ্যালয়ে টেলিভিশনের মাধ্যমে ভালো ভালো স্কুলের শিক্ষকদের ক্লাস একসঙ্গে দেখাতে পারি। সেজন্য একটা শিক্ষা টিভিজাতীয় কোনো কিছু চিন্তা করা যায়।’
তিনি বলেন, ‘এটার ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক উভয়ই উপকৃত হবেন। দেশের সব শিক্ষার্থী একই মানের শিক্ষা পাবে। এ বিষয়টা নিয়ে আমরা চিন্তা করে আগামী দিনে কীভাবে কী করা যায় তা ঠিক করব।’
দীপু মনি বলেন, ‘শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য দক্ষতা অর্জন দরকার। শিক্ষার্থীরা বাংলা এবং ইংরেজি বলতে, লিখতে এবং শুনতে পারছে কিনা সে দক্ষতাগুলো অর্জন করতে হবে। গণিত, বিজ্ঞান, সাধারণ জ্ঞান যেটুকু প্রয়োজন একই সঙ্গে আইসিটি এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানা এসব বিষয়ে মিনিমাম দক্ষতা অর্জন যেন শিক্ষার্থীরা করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা মূল্যবোধ জ্ঞান দিতে হবে যেন তারা সুনাগরিক হতে পারে। এসব বিষয়ে ডিসিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করা এবং নোট, গাইডবই একেবারেই যেন না থাকে, অবকাঠানো উন্নয়ন যেন গুণগত মানসম্পন্ন হয়, খেলার মাঠ যেন নষ্ট না হয়; এসব বিষয়ে জোরালো নজর দিতে বলা হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যেন যৌন হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্রই জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বলা হয়েছে। কারিগরি শিক্ষার বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। শিক্ষার ক্ষেত্রে যেসব জায়গায় ডিসিদের মনিটর করার সুযোগ রয়েছে সেসব ক্ষেত্রে মনিটর করতে বলা হয়েছে।’
সরকারি চাকরিজীবীদের সন্তানদের জন্য স্কুলে কোটা রাখার দাবি করা হয়েছে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘একটা নিয়ম রয়েছে সরকারি কর্মকর্তারা বদলি হয়ে অন্য জায়গায় গেলে ওই এলাকার সরকারি বিদ্যালয়ে সন্তানরা ভর্তি হতে পারে। কাজেই সেখানে কোটা সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছেলেদের জন্য একটা কোটাব্যবস্থা রয়েছে সেটাও পর্যালোচনা করা হবে। এটাও রাখার প্রয়োজন আছে কি না।’
এমইউএইচ/বিএ/এমকেএইচ