পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন


প্রকাশিত: ০৩:১২ পিএম, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫

শিক্ষকদের জন্য সতন্ত্র বেতন কাঠামো তৈরিসহ কয়েক দফা দাবি ও অবমাননার বিষয়টি আমলে না নিয়ে জাতীয় বেতন কাঠামো ঘোষণার প্রতিবাদে দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন শিক্ষকরা। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ কর্মবিরতি শেষ হয় বিকেল ৫টায়। এ সময় শিক্ষকরা র্যা লি, মানবন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আহ্বানে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

সমাবেশে শিক্ষকরা বলেন, অনুমোদিত বেতন কাঠামোয় শিক্ষকদের অবস্থান ‘অস্পষ্ট’ এবং শিক্ষকদের স্বতন্ত্র পে-স্কেলের দাবিও মানা হয়নি। দাবিসমূহ ও অবমাননার বিষয়টি চিন্তা না করেই বর্তমান বেতন কাঠামো নির্ধারিত হয়েছে এবং সিলেকশান গ্রেডও বাতিল করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ঘোষিত বেতন কাঠামো অনেকটা অস্পষ্ট। এবং বর্তমান কাঠামোতে শিক্ষকদের ন্যায্য আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটবে না।

শিক্ষকরা বলেন, মন্ত্রীপরিষদ শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া ও মর্যাদার বিষয় বিবেচনার জন্য একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এক্ষেত্রে সিনিয়র মন্ত্রীদের সমন্বয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন শক্তিশালী কমিটি গঠনের দাবি জানান তারা। কমিটিতে তাদেরকেই রাখতে হবে যারা শিক্ষকদের দাবি অনুধাবন করতে পারেন।

তারা বলেন, শিক্ষকদের এ আন্দোলন শুধু বেতন কাঠামোর জন্য নয়, শিক্ষাব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক ও সামগ্রিক রূপ দিয়ে প্রকৃত মানব সৃষ্টির জন্যে। শিক্ষকরা তাদের দায়িত্ব পালনে অতীতে যেমন কার্পণ্য করেনি ভবিষ্যতেও করবে না।

এদিকে, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুপুর ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে শিক্ষকরা একটি র্যা লি বের করেন। র্যা লিটি দোয়েল চত্বর ঘুরে জাতীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।

র্যা লি পরবর্তী এক বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা যে দাবি নিয়ে আন্দোলন করছি। সেই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো। দাবি আদায় করেই ঘরে ফিরবো।

তিনি আশা ব্যক্ত করে বলেন, গতকাল মন্ত্রিসভায় এটি নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে এবং এ সময় তিনি দ্রুত প্রধানমন্ত্রীকে তাদের দাবি বাস্তবায়নের আহ্বন জানান। একই সঙ্গে পে-স্কেল বাস্তবায়ন কমিটিতে একজন শিক্ষক প্রতিনিধি রাখার দাবিও তোলেন তিনি।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এ এস এম মাকসুদ কামাল, ঢাবি শিক্ষক অধ্যাপক ড. শফিউল আলম ভূঁইয়া, অধ্যাপক নাজমা শাহীন, অধ্যাপক আক্তার হোসেন খান প্রমুখ।

একই দাবিতে সকাল ১১টায় বুয়েট শহীদ মিনারে সমবেত হন বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সেখান থেকে একটি র্যা লি নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন তারা। পরে একাডেমিক কাউন্সিল ভবনের নীচে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. এহসান। কর্মসূচিতে শিক্ষকগণ স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
এসময় শিক্ষক নেতারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেল ও প্রস্তাবিত অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামো পুনঃনির্ধারণসহ যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

এছাড়াও কর্মবিরতি পালন ও র্যা লি করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ৩৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

এমএইচ/এএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।