পাবলিক পরীক্ষার সময় কমছে
জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেটসহ (এইচএসসি) সমমানের সব পাবলিক পরীক্ষা সম্পন্নের সময় কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নেয়া এমন সিদ্ধান্ত আগামী বছর থেকে কার্যকর হবে বলে জানা গেছে।
শিক্ষা বোর্ডগুলোর সূত্রে জানা গেছে, জেএসসি পরীক্ষা সম্পন্ন করতে সময় লাগে ১৫ দিন। পাঁচদিন কমিয়ে এনে এবার থেকে তা ১০ দিনে সম্পন্নের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এসএসসি পরীক্ষা সম্পন্ন করতে সময় লাগে ২৮ থেকে ৩০ দিন। এ সময় ১০ দিন কমিয়ে ২০ দিনে সম্পন্নের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন >> জিপিএ-৫ উঠে যেভাবে হবে নতুন গ্রেডবিন্যাস
এইচএসসি পরীক্ষা শেষ করতে সময় লাগে ৪৫ দিন। এ সময় ১৫ দিন কমিয়ে ৩০ দিনে সম্পন্নের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। তবে ছুটির কারণে বা জরুরি কারণে নির্ধারিত সময় দু-একদিন বেশি লাগতে পারে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক মঙ্গলবার জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে সব পাবলিক পরীক্ষার দিন কমানো হয়েছে। চলতি বছর থেকে এটি কার্যকর হবে। ফলে মাসজুড়ে আর কোনো পাবলিক পরীক্ষার আয়োজন থাকছে না।
তিনি আরও বলেন, নতুন সিলেবাস অনুযায়ী এখন থেকে জেএসসি পরীক্ষা ১০ দিনে, এসএসসি ২০ দিনে এবং এইচএসসি পরীক্ষা ২৮ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে। দ্রুত পরীক্ষা শেষ হলে বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রমে আর ব্যাঘাত ঘটবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন >> কোনো পদ্ধতি চাপিয়ে দেয়া হবে না : শিক্ষামন্ত্রী
২০১৮ সালের জেএসসি পরীক্ষা ১ থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৯ সালের জেএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শেষ করা হবে ১০ নভেম্বরের মধ্যে। ২০১৮ এর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা (তত্ত্বীয়) ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে তা সম্পন্ন হয় ২৫ ফেব্রুয়ারি। আগের বছরগুলোতে এর চেয়ে বেশি সময় লাগে। এ পরীক্ষার সময় কমিয়ে ২০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে।
এছাড়া গত বছর এইচএসসি পরীক্ষা ১ এপ্রিল শুরু হয়ে শেষ হয় ১১ মে। আগামীতে এ পরীক্ষা এক মাসের মধ্যেই সম্পন্ন হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা গ্যাপ না রেখে আগে থেকেই নেয়া হয়। এ কারণে এ পরীক্ষার সময় কমিয়ে আনার প্রয়োজন হবে না।
শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, পাবলিক পরীক্ষার সময় বিভিন্ন কেন্দ্রের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস বন্ধ থাকে। ১০ থেকে ১৫ দিন সময় কমিয়ে আনায় ওইসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হবে না। ফলে পরীক্ষার্থী ছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিয়মত ক্লাস করতে পারবে।
এছাড়া পরীক্ষার সময় বেশি পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা প্রশ্নফাঁসের মতো প্ররোচনায় পড়েন। দ্রুততম সময়ে পরীক্ষা শেষে হলে এ সমস্যাও থাকবে না। অভিভাবকরাও দ্রুত চাপমুক্ত হবেন। এসব কারণে সময় কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন >> উচ্চশিক্ষায় ভারসাম্যহীন মূল্যায়ন পদ্ধতি : কর্তৃপক্ষ ভাববেন কি?
জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মু. অধ্যাপক জিয়াউল হক আরও বলেন, পরীক্ষার সময় কমিয়ে আনা হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের পাঠকার্যক্রমও নিয়মিত হবে। অন্যান্য একাডেমিক কার্যক্রমেরও সুযোগ বাড়বে।
‘পরীক্ষার মধ্যে গ্যাপ থাকলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হন বলে মনে হয় না। দীর্ঘদিন ধরে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে অভিভাবকরাও মানসিক চাপে থাকেন। এছাড়া বেশি গ্যাপ থাকলে পরীক্ষা নিয়ে অনৈতিক কাজের সুযোগ বাড়ে। এসব কারণে দ্রুত পরীক্ষা সম্পন্নের নতুন এ উদ্যোগ নেয়া।’
এমএইচএম/এমএআর/এমএস