১০ শতাংশ বেতন কাটার প্রতিবাদে শিক্ষক-কর্মচারীদের অবস্থান কর্মসূচি
এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে ইতোপূর্বে প্রতিমাসে ৬ শতাংশ হারে টাকা কেটে নিতো অবসর কল্যাণ বোর্ড এবং কল্যাণ ট্রাস্ট। গত ১৫ এপ্রিল থেকে আরও ৪ শতাংশ হারে কেটে রাখবে প্রতিষ্ঠানটি, এই মর্মে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অর্থাৎ এখন থেকে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনের ১০ শতাংশ অবসর কল্যাণ বোর্ড এবং কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য কেটে রাখা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুর ২টা থেকে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশ করছে বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী ফোরাম।
তাদের দাবি, বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ হারে টাকা কেটে নেয়ার এই সিদ্ধান্ত স্থায়ীভাবে বাতিল করতে হবে।
বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী ফোরামের সভাপতি সাইদুল ইসলাম সেলিম জানান, অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কেটে নেয়ার এ সিদ্ধান্ত স্থায়ীভাবে বাতিল করা না হলে তারা আগামী ১ থেকে ৫ মে পর্যন্ত জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান করবেন।
সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেয়া শিক্ষক-কর্মচারীরা জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের এমপিও থেকে অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতি মাসে ৬ শতাংশ টাকা করে কেটে রাখে। কিন্তু গত ১৫ এপ্রিল তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই ৬ শতাংশের সঙ্গে আরও ৪ শতাংশ কর্তনের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এ জন্য দেয়া হবে না বাড়তি কোনো সুযোগ-সুবিধা।
এর আগেও ২০১৭ সালের ১৫ জুন থেকে একই ধরনের একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরবর্তীতে শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রতিবাদের মুখে সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও একই ধরনের চেষ্টা শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রতিবাদের মুখে ভেস্তে যায়।
বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি, অবসর-কল্যাণ ট্রাস্টে তাদের বেতন থেকে প্রতিমাসে ৬ শতাংশ টাকা কেটে রাখা হয়। এই ৬ শতাংশ কাটার পরও ঘাটতি পূরণে সরকারি সহযোগিতার কথা বলা হয়েছিল। অথচ অবসর কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা কোন ব্যাংকে জমা রাখা হয়, লাভ কত পায় এবং কারা এই লাভ ভোগ করেন, সেটার কোনো হিসাব চাঁদা প্রদানকারী শিক্ষক-কর্মচারীরা জানেন না।
২০০২ সালের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিরীক্ষায় দেখা যায়, এই দুই প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক পর্যায়ের এক কোটি টাকা গায়েব হয়ে গেছে। ৪০ কোটি টাকা সরকারি ব্যাংক থেকে বেসরকারি ব্যাংকের চলতি হিসাবে স্থানান্তর করে ওই টাকার লাভ ভোগ করেছে পরিচালনা কমিটি। বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) খতিয়ে দেখা দরকার।
এই সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল ইসলাম মাসুদ, সহ-সভাপতি বিপ্লব কান্তি দাস, হারুন অর রশিদ, মুদাচ্ছির আলমসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত শতাধিক শিক্ষক।
পিডি/এমএমজেড/এমকেএইচ