ভারতীয় সিরিয়াল এখন শিক্ষার্থীদের খাতায়
অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে ভারতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসন একটু একটু করে গ্রাস করেছে। পোশাকের পর এবার ভারতীয় সিরিয়ালের প্রভাব পড়েছে শিক্ষার্থীদের খাতায়।
এতদিন শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, মুক্তিযুদ্ধ, গ্রামবাংলা এবং কবি-সাহিত্যিকের ছবি দিয়ে খাতার প্রচ্ছদ ব্যবহার করতে দেখা গেলেও এখন শিক্ষা উপকরণেও পড়েছে ভারতীয় সিরিয়ালের প্রভাব।
পাঠ্যপুস্তকের সঙ্গে স্কুল শিক্ষার্থীদের হাতে শোভা পাচ্ছে স্টার জলসার ‘পাখি’, ‘কিরণমালা’সহ বিভিন্ন সিরিয়ালের নায়িকাদের ছবিসম্বলিত মলাটের খাতা। রাজধানীসহ দেশের প্রায় সব জেলার বই খাতার দোকানে এই খাতাগুলো ধুমছে বিক্রি হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর মিরপুর, মোহম্মদপুর, গুলিস্তান, মগবাজার, পোস্তগোলা, যাত্রাবাড়ির বেশ কয়েকটি দোকানে এ ধরনের খাতা পাওয়া যাচ্ছে।
সিরিয়ালের নায়ক নায়িকা বা বিভিন্ন চরিত্রের ছবিসম্বলিত মলাটের নিচের অংশে রাখা হয়েছে শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয়ের নাম, শ্রেণি, শাখা, বিষয় এবং রোল নম্বর লেখার জায়গা।
কিরণমালা’ ও ‘পাখি’ খাতা বর্তমানে বাজেরে থাকলেও স্টার জলসার ‘ইষ্টিকুটুম’, ‘ঠিক যেন লাভ স্টোরি’, ‘চোখের তারা তুই’, ‘জলনূপুর’, ‘তুমি আসবে বলে’, ‘বধূবরণ’, ‘সব চরিত্র কাল্পনিক’, ‘মন নিয়ে কাছাকাছি’ সিরিয়ালের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের ছবিসম্বলিত খাতাও বাজারে আসার অপেক্ষায় আছে বলে জানিয়েছে বিক্রেতারা।
বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এসব খাতা শিশুদের কাছে বিক্রি করা দৃষ্টিকটু হলেও এর চাহিদা ব্যাপক। তাই তারা বিক্রি করছেন।
মগবাজার টিঅ্যান্ডটি স্কুলের শিক্ষক মো. আফজাল হোসেন এ বিষয়ে বলেন, এখনকার ছেলে মেয়েরা দেশের কবি সাহিত্যিকদের চিনেনা। এরা সিরিয়াল দেখে অসুস্থ বিনোদন শিখছে। আর এসব ভারতীয় টিভি চ্যানেল আমাদের দেশীয় সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
একাধিক অভিভাবক জানান, ভারতীয় চ্যানেলের সিরিয়ালের প্রতি পরিবারের সদস্যরা আসক্ত হওয়ায় শিশু-শিক্ষার্থীরাও এতে আসক্ত হচ্ছে। এরই প্রভাব পড়েছে লেখার খাতায়।
এর আগে বোঝে না সে বুঝে না’ সিরিয়ালে পাখি চরিত্রে অভিনয়কারীর পোশাকে (পাখি ড্রেসে) আকৃষ্ট হয়ে কিনতে না পেরে বাংলাদেশে কিশোরীর আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে। পাশাপাশি সিরিয়াল দেখে স্বামী-স্ত্রী মধ্যেকার সম্পর্কের অবনতি ঘটছে অহরহ।
আএসএস/এসকেডি/এমএস