বঙ্গোপসাগরে ৫ ট্রলারসহ অর্ধশত জেলে অপহরণ
মাত্র একদিনের ব্যবধানে বঙ্গোপসাগরে আবারো ট্রলারে গণডাকাতিসহ জেলে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার রাত ৩টার দিকে পাথরঘাটা থেকে ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরের ডুবোজাহাজ এলাকায় এ গণডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় সশস্ত্র ডাকাতরা মুক্তিপণের জন্য পাঁচটি ট্রলারসহ অন্তত অর্ধশত জেলেকে অপহরণ করেছে।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. গোলাম মোস্তফা জাগো নিউজকে জানান, রাত ১টার দিকে বঙ্গোপসাগরের ডুবোজাহাজ এলাকায় জেলেরা জাল ফেলে ঘুমিয়েছিল। এরপর রাত ৩টার দিকে সুন্দরবন কেন্দ্রিক ২৫/৩০ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাত দল ঘুমন্ত জেলেদের উপর হামলা চালায়। এ সময় তারা প্রায় ৫০টি ট্রলারে গণডাকাতি শেষে পাঁচটি ট্রলারসহ অন্তত অর্ধশতাধিক জেলেকে মুক্তিপণের জন্য সুন্দরবনের গহীনে নিয়ে যায়।
অপহৃত ট্রলার ও জেলেদের মধ্যে এফবি বাবা-মায়ের দোয়া ট্রলারের মোস্তফা মাঝি, সোলায়মান, জামাল হোসেন, মিজান ও শানু মিয়া, মায়ের আর্শীবাদ ট্রলারের বশির মাঝি, বশির ট্রলারের মাসুম মাঝি, পিমন ট্রলারের লাল চান মাঝি ও আল্লাহর দান ট্রলারের সোহরাব মাঝির নাম জানা গেছে।
ফেরত আসা জেলেদের বরাত দিয়ে তিনি আরো জানান, ওই দস্যু বাহিনী রাজু বাহিনী পরিচয় দিয়ে ট্রলার ও জেলেদের নিয়ে গেলেও আসলে তারা রাজু বাহিনী নয়। এটি একটি পুরান বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয় নতুন কোনো বাহিনী হতে পারে। অপহৃত জেলেদের বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়া, পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার ও চরখালী এবং বরগুনার পাথরঘাটার চরদুয়ানী এলাকায়।
এদিকে, ডাকাতি শেষে ট্রলার ও জেলেদের অপহরণ করে সুন্দরবনে ফেরার পথে এফবি খানজাহান নামের একটি ট্রলারকে ধাওয়া করে ডাকত দল। এ সময় ওই ট্রলারটি দ্রুত পালানোর চেষ্টা করলে ডাকাত দল ওই ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে। এতে ওই ট্রলারের পেছনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলেও জানান তিনি।
এ বিষয় কোস্টগার্ড পাথরঘাটা স্টেশন কমান্ডার লে. এস এ রউফ জানান, ডাকাতির খবর তারা শুনেছেন। যেহেতু ডাকাতিরস্থল কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের আওতায়, তাই তিনি ডাকাতির ঘটনা পশ্চিম জোনকে জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাতে সুন্দরবন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের কচিখালী এলাকায় জেলে ট্রলারে গণডাকাতির পর ছয় জেলেকে এবং রোববার সকালে পক্ষীদিয়া এলাকায় গণডাকাতি পর ২০ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে সুন্দরবন কেন্দ্রিক জলদস্যুরা। এখন পর্যন্ত অপহৃত এসব জেলেদের উদ্ধার কিংবা সন্ধান দিতে পারেনি কোস্টগার্ড।
এআরএ/পিআর