জেএসসি-জেডিসিতে পাসের হার বাড়লেও কমেছে জিপিএ-৫
এ বছর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষায় মোট ২২ লাখ ৩০ হাজার ৮২৯ জন শিক্ষার্থী পাস করেছে। এবার গড় পাসের হার ৮৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৮ হাজার ৯৫ জন। গতবছর পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এ বছর পাসের হার বেড়েছে ২ দশমিক ১৮ শতাংশ।
এক্ষেত্রে মেয়েদের পাসের হার ৮৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং ছেলেদেও ৮৫ দশমিক ১২ শতাংশ। যা গত বছর ছিল যথাক্রমে ৮৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং ৮৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
এ বছর জেএসসি-জেডিসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯৫ হাজার ৭৩১ জন। যা গত বছর ছিল এক লাখ ৯১ হাজার ৬২৮ জন। অর্থাৎ এ বছর জিপিএ-৫ কমেছে ৯৯ হাজার ৮৯৭ জন।
জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে আজ (সোমবার) সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সামনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এসব তথ্য তুলে ধরেন।
এর আগে সকাল ১০টায় সব বোর্ড চেয়ারম্যানদের সঙ্গে নিয়ে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে জেএসসি-জেডিসি ফলাফলের কপি তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
জেএসসি-জেডিসির ফলাফল
এ বছর আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড ও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ২২ লাখ ১৬ হাজার ৯৬১ জন। যা গত বছর ছিল ২১ লাখ ৩ হাজার ৭৬৩ জন। সে তুলনায় পরীক্ষার্থী বেড়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ১৯৮ জন। অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাস করেছে ১৮ লাখ ৯০ হাজার ৫১৮ জন। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ১৭ লাখ ৭ হাজার ২৪ জন। সে হিসাবে এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৪৯৪ জন। গত বছর সাধারণ ৮ শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ছিল ৮৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। যা গত বছর ছিল ৮৩ দশমিক ১০ শতাংশ। এবার ৮ বোর্ডে গড় পাসের হার বেড়েছে ২ দশমিক ১৮ শতাংশ।
এবার সাধারণ ৮ বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৮ হাজার ৯৫ জন। যা গত বছর ছিল ১ লাখ ৮৪ হাজার ৩৯৭ জন। সে হিসাব অনুযায়ী এবার জিপিএ-৫ কমেছে ১ লাখ ১৮ হাজার ২৮৯ জন।
মাদরাসা বোর্ডের ফল
এবার মাদরাসা বোর্ডে ৩ লাখ ৮২ হাজার ২০৮ জন অংশ নিয়ে পাস করেছে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৩১১ জন। পাসের হার ৮৯ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। গত বছর ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৫৭৮ জন অংশ নিয়ে পাস করেছিল ৩ লাখ ১১ হাজার ২৪৭ জন। পাসের হার ছিল ৮৬ দশমিক ৮০ শতাংশ।
ফলে এগিয়ে মেয়েরা
এবার জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষায় মোট ১৪ লাখ ৬ হাজার ৩১৭ জন ছাত্রী ও ১১ লাখ ৯২ হাজার ৮৫২ জন ছাত্র পরীক্ষায় অংশ নেয়। ফলে ছাত্রের তুলনায় ছাত্রীর সংখ্যা বেশি ছিল ২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬৫ জন।
এর মধ্যে ১২ লাখ ১৫ হাজার ৪৪২ জন ছাত্রী ও ১০ লাখ ১৫ হাজার ৩৮৭ জন ছাত্র পাস করেছে। ছাত্রীদের পাসের হার ৮৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং ছাত্রদের পাশের হার ৮৫ দশমিক ১২ শতাংশ। ছাত্রের তুলনায় ১ দশমিক ৩১ শতাংশ বেশি ছাত্রী পাস করেছে।
এবার জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতেও মেয়েরা এগিয়ে। মেয়েরা জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৯ হাজার ৯০৫ জন। পক্ষান্তরে ছেলেরা জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৮ হাজার ১৯০ জন। সে অনূযায়ী ছেলেদের তুলনায় ১১ হাজার মেয়ে বেশি জিপিএ-৫ অর্জন করেছে।
শতভাগ পাশ-ফেল প্রতিষ্ঠান
এবার শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪ হাজার ৭৬৯টি। যা গত বছর ছিল ৫ হাজার ২৭৯টি। এবার এই সংখ্যা কমেছে ৫১০টি।
অন্যদিকে, শতভাগ শূন্য পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪৩টি। গত বছর ছিল ৫৯টি। এবার ১৬টি শতভাগ শূন্য পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও কমেছে।
ফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ফলাফলের পরিসংখ্যান তুলে ধরার পর বলেন, বিশ্বের সঙ্গে সমন্বয় করে আমাদের দেশের পাবলিক পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করা হচ্ছে। এ কারণে ফলাফলে ছন্দপতন হচ্ছে। তবে এসব বিষয় আরও গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা দরকার। আগামী সরকার ক্ষমতায় এলে তারা বিষয়টি বিশ্লেষণ করে দেখবেন বলে মন্তব্য করেন।
৮ বোর্ডে পাসের হার
৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে রাজশাহী বোর্ডে পাসের হার ৯৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ, বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে ৯৭ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ, যশোর ৮৪ দশমিক ৬১, সিলেট ৭৯ দশমিক ৮২, দিনাজপুর ৮১ দশমিক ৬৩, ঢাকা ৮৩ দশমিক ১৯, চট্টগ্রাম ৮১ দশমিক ৫২ এবং কুমিল্লা বোর্ডে পাসের হার ৮৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
এমএইচএম/এমএমজেড/জেআইএম