পলাতক তারেককে ফেরাতে পুলিশের প্রস্তুতি সম্পন্ন
২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার অন্যতম আসামি ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে পুলিশের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। কূটনৈতিক কিছু বিষয়ে আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেই দেশে ফিরিয়ে আনা হবে তাকে।
তারেককে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-এনসিবি) মাহাবুবুর রহমান ভূইয়া জাগো নিউজকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘তারেককে ফিরিয়ে আনতে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের সব অনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে বাকিটা সরকারের উপর নির্ভর করছে।’
এর আগে, ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ২৪ জন নিহত হন। আহত এবং পঙ্গু হন শতাধিক আওয়ামী সমর্থক। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ২০০৫ সালে গ্রেফতার করা হয় জজ মিয়া নামে নোয়াখালীর সেনবাগের এক যুবককে। হত্যার হুমকি দিয়ে তাকে আদালতে মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেয়ায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কয়েকজন কর্মকর্তা।
দীর্ঘ কয়েক বছর কারাভোগের পর একটি দৈনিকের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানা যায় জজ মিয়ার আসল পরিচয়। এটি যাচাই-বাছাই করে মামলা থেকে অব্যহতি দেয়া হয় তাকে।
পরিবর্তন করা হয় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। পরবর্তীতের ২০১১ সালে ৫২ জনকে অভিযুক্ত করে এই মামলার সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে সিআইডি। যথেষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এতে তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবর, হারিছ চৌধুরী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের নাম দেয়া হয়।
আসামিদের মধ্যে ২৫জন কারাগারে ও ৮ জন জামিনে রয়েছেন। এখনো পলাতক আছেন ১৯ জন। এদের মধ্যে তারেক রহমান লন্ডনে এবং তাজউদ্দিন সাউথ আফ্রিকাতে রয়েছেন বলে পুলিশের কাছে তথ্য থাকলেও পলাতক বাকিদের গন্তব্য জানেন না তারা।
ঘটনার তদন্ত ও সিআইডি কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দ জাগো নিউজকে বলেন, তারেককে ফিরিয়ে আনতে ইতোমধ্যেই রেড অ্যালার্ট জারি করেছে ইন্টারপোল। আশা করি তাকে ফিরিয়ে এনে বিচারকাজ দ্রুত সম্পন্ন করা যাবে।
মাহাবুবুর রহমান ভূইয়া আরো জানান, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পুলিশের পক্ষ থেকে যেসব কাজ রয়েছে তা ইতোমধ্যে সম্পন্ন করে ডিপ্লোম্যাটিক চ্যানেলগুলোতে দেয়া হয়েছে। কাগজপত্রগুলো সংশ্লিষ্ট দফতরেও পাঠানো হয়েছে। এর পরবর্তী পদক্ষেপ সরকার নেবে।
পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স বলছে, ফিরিয়ে আনার বিষয়টি এখনো প্রক্রিয়াধীন। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য থেকে কোনো আসামিকে ফিরিয়ে আনতে গেলে জটিলতায় পড়তে হয়। অনেক সময় রেড এলার্ট জারি করলেও ফিরিয়ে আনা যায় না। যুক্তরাজ্যে কোনো বন্দি সে দেশের আইনের আশ্রয় নিতে পারে। বন্দিবিনিময়ের ক্ষেত্রে ওই আসামিকে বিচারের সম্মুখীন করা হলেও তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ায় নিষেধাজ্ঞাসহ কিছু জটিল শর্ত রয়েছে।
এআর/একে/এমআরআই