প্রাথমিকের ৬৫ লাখ পাঠ্যপুস্তক ছাপানো নিয়ে ধন্দ!

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৪৩ পিএম, ১৪ নভেম্বর ২০১৮

উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো ও প্রাথমিক স্তরের আপদকালীন স্টকের ৬৫ লাখ বই নিয়ে মুদ্রাকরদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) চাচ্ছে ওই বই বিদেশি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ছাপাতে। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) নির্দেশনা আছে বলে দাবি করছে তারা।

তবে মুদ্রাকররা সরকারি ক্রয় আইন (পিপিআর) ও এনসিটিবির আগের রীতি অনুসরণের দাবি করেছেন। বুধবার তারা দল বেঁধে এনসিটিবিতে যান। ওই সিদ্ধান্ত না মানলে তারা মামলার পাশাপাশি অন্য বই মুদ্রণ বন্ধ করে দেয়ার হুমকিও দেন বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে মুখ খুলছে না এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ। বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে বিতরণ নিয়ন্ত্রক জিয়াউল হক বলেন, ৬৫ লাখ বই নতুন করে ছাপানোর কথা শুনেছি। বিষয়টি আমার অধীনে নয়। এ কারণে কিছু বলতে পারব না।

মুদ্রণ শিল্প সমিতির চেয়ারম্যান শহীদ সেরনিয়াবাত জাগো নিউজকে বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ বই ছাপার সংখ্যা কমিয়ে দেয়। এ কারণে এখন নতুন করে বই ছাপতে হচ্ছে।

এর মধ্যে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর জন্য ৩৩ লাখ এবং প্রাথমিক শিক্ষা স্তরের জন্য ৩২ লাখ বই ছাপতে হচ্ছে। কিন্তু এনসিটিবির চেয়ারম্যান বিনা টেন্ডারে বিদেশ থেকে ছাপতে চান ওই বই। চেয়ারম্যানের যুক্তি হচ্ছে, বিদেশে বই ছাপানোর খরচ কম। কিন্তু বিদেশে বই ছাপার পরও সরকারকে আমদানি খরচ হিসেবে আরও ৩১ শতাংশ অর্থ ব্যয় করতে হয়। সেটি ধরলে ব্যয় আরও বেড়ে যায়। শুভঙ্করের ওই ফাঁকি সামনে রেখেই রহস্যজনক কারণে বিদেশে কাজ দিতে চাচ্ছেন এনসিটিবি চেয়ারম্যান। এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপের পাশাপাশি প্রয়োজনে বই সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ারও হুমকি দেন শহীদ সেরনিয়াবাত।

মুদ্রণ সমিতির সাবেক এক চেয়ারম্যান বলেন, অতীতে যেসব প্রতিষ্ঠান আগে কাজ শেষ করেছে, তারাই বাড়তি বই ছাপার কাজ পেয়েছে। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের নির্দেশনার দোহাই দিয়ে কাজ বিদেশে দেয়ার পায়তারা চলছে। অথচ সরকারি অর্থে ছাপানো এ বইয়ের ব্যাপারে অধিদফতরের নির্দেশনা দেয়ার কথা নয়। রহস্যজনক কারণে এনসিটিবি বিদেশমুখী হতে চাচ্ছে।

এ ব্যাপারে অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ের বইয়ের জন্য আমরা শুধু চাহিদা দিয়ে থাকি, এনসিটিবি সেই চাহিদা অনুযায়ী আমাদের বই সরবরাহ করে। আমরা ইন্সপেকশন করে থাকি। চাহিদা মতো সকল বিষয় ঠিক থাকলে অর্থ পরিশোধ করা হয়। পিপিআরের সকল বিষয় দেখভাল এনসিটিবি করে থাকে।

তিনি বলেন, যদি এনসিটিবির কারণে নির্ধারিত সময়ে পাঠ্যপুস্তক পেতে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়, তবে আমরা বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে অবহিত করবো। সেখান থেকে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ওই সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, এনসিটিবির চেয়ারম্যানের দেশপ্রেম আরেকটি দেশের প্রতি। তাই তিনি দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে কাজ না দিয়ে বিদেশে পাঠাতে চান। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সরকারকে বিতর্কিত করতে এমন সিদ্ধান্ত নিতে চাচ্ছেন। কিন্তু তা করতে দেয়া হবে না।

এমএইচএম/এমএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।