‘গ্যারান্টি দিচ্ছি এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস হবে না’
## অভিভাবকরা পরীক্ষা কেন্দ্রের চৌহদ্দিতে প্রবেশ করতে পারবেন না
## পরীক্ষা হলের পরিদর্শকরাও স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবেন না
## প্রশ্নপত্র পাঠানোর ট্রাংকে বিশেষায়িত ইলেকট্রনিক ডিভাইস স্থাপিত থাকবে
সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৫ অক্টোবর (শুক্রবার)। আসন্ন এ ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে সার্বিক প্রস্তুতি শেষ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। অতীতে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ থাকলেও এবার এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
সম্প্রতি ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে জাগো নিউজের সাথে কথা বলেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। জাগো নিউজের কাছে দেয়া সংক্ষিপ্ত সাক্ষাতকারে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন তিনি।
জাগো নিউজ : আসন্ন এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি কেমন?
ডা. আবুল কালাম আজাদ : আসন্ন এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে চলছে। অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় এবার আরও বেশি ভালো ও সুষ্ঠু পরিবেশে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হবে। গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি এবার প্রশ্নপত্র ফাঁস হবে না।
জাগো নিউজ : সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা গ্রহণের জন্য কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে?
ডা. আবুল কালাম আজাদ : সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা গ্রহণের জন্য পরীক্ষার্থীদের সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ৮টার পর সব কেন্দ্রের প্রবেশদ্বার খুলে দেয়া হবে। পরীক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশি করে ভেতরে প্রবেশ করানো হবে। এ বছর অভিভাবকরা পরীক্ষা কেন্দ্রের চৌহদ্দিতে প্রবেশ করতে পারবেন না।
প্রবেশপত্রে লিখিত নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষার্থীদের স্বচ্ছ কালো কালির বলপেন ব্যবহার করতে হবে। এ ছাড়া মোবাইল ফোন, ঘড়ি ও ক্যালকুলেটরসহ যেকোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। শুধু পরীক্ষার্থীরাই নন, এ বছর পরীক্ষার হলে যারা ডিউটি করবেন তারাও স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। শুধুমাত্র বাইরে যোগাযোগ করার জন্য তাদেরকে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে এনালগ মোবাইল ফোন সরবরাহ করা হবে।
জাগো নিউজ : রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার বাইরের কেন্দ্রসমূহে প্রশ্নপত্র পাঠানোর ব্যাপারে কী ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে?
ডা. আবুল কালাম আজাদ : একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ প্রহরায় ঢাকা ও ঢাকার বাইরের পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা প্রশ্নপত্র নিয়ে যাবেন। যে সব ট্রাংকে প্রশ্নপত্র পাঠানো হবে সে সব ট্রাংকের সাথে বিশেষায়িত ইলেকট্রনিক ডিভাইস স্থাপিত থাকবে, যার মাধ্যমে প্রশ্নপত্র বহনকারী গাড়ির গতিবিধি স্বাস্থ্য অধিদফর থেকে সার্বক্ষণিক মনিটর করা হবে।
সিলগালা প্রশ্নপত্রের ট্রাংকটি এক মিলিমিটার পরিমাণ খুললেও অধিদফতরের মনিটরে সংকেত বেজে উঠবে। পরীক্ষার আগের দিন সরকারি ট্রেজারিতে প্রশ্নপত্র রেখে পরদিন সকালে পরীক্ষার হলে নেয়া হবে।
জাগো নিউজ : পরীক্ষার আগের রাতে প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ নানা গুজব বের হয়, এ বিষয়ে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে?
ডা. আবুল কালাম আজাদ : পরীক্ষার আগের রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন অখ্যাত অনলাইনে প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ছড়ানো হয়। এসব বন্ধে করণীয় নির্ধারণে ইতোমধ্যেই একাধিক গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এখন থেকেই তারা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন।
এ ছাড়া পরীক্ষার আগের দিন থেকে স্বাস্থ্য অধিদফতরে নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হবে। নিয়ন্ত্রণকক্ষে টেলিফোন বা মোবাইলে কল করে যেকোনো ধরনের অভিযোগ জানাতে পারবেন। পরীক্ষার আগের দিন পরীক্ষা কেন্দ্রের আশেপাশের সকল ফটোকপি মেশিনের দোকান বন্ধ থাকবে।
২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের জন্য আগামী শুক্রবার (৫ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীসহ সারাদেশের ১৯টি কেন্দ্রে সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছরের ভর্তি পরীক্ষায় প্রায় ৬৬ হাজার পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। সরকারি ৩৬টি মেডিকেল কলেজে ৪ হাজার ৬৮টি ও বেসরকারি ৬৯টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে আসন সংখ্যা ৫ হাজার ৭৫১টি।
এমইউ/আরএস/জেআইএম