এসএসসি-সমমানের ফলে সন্তুষ্ট না প্রায় আড়াই লাখ পরীক্ষার্থী
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল পরিবর্তনে সারাদেশে ২ লাখ ৪০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পুনঃনিরীক্ষণ আবেদন করেছে। এবার গণিত ও ইংরেজি বিষয়ের আবেদনের সংখ্যা বেশি রয়েছে। গত ১৩ মে আবেদন কার্যক্রম শেষ হয়েছে। আগামী ৩১ মে পুনঃনিরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক জাগো নিউজকে বলেন, ঢাকা বোর্ডে এবার ৬৩ হাজার ৪০০টি আবেদনকারী ১ লাখ ৪১ হাজার বিষয়ে ফল পরিবর্তনের জন্য আবেদন করছে। আবেদনে শীর্ষে রয়েছে গণিত ও ইংরেজি বিষয়।
অন্যদিকে, রাজশাহী বোর্ডে ২১ হাজার ১৭৬ শিক্ষার্থী ৪০ হাজার ৯৬৮টি বিষয়ে আবেদন করেছে। এর মধ্যে গণিতে ৭ হাজার ২৬২ জন, ইংরেজি প্রথমপত্রে ৩ হাজার ২৪১ ও ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রে ২ হাজার ৮৬৪টি বিষয়ে আবেদন রয়েছে।
দিনাজপুর বোর্ডে ১৭ হাজার ৮০৮ শিক্ষার্থী ৩৪ হাজার ৮৫০টি বিষয়ে আবেদন করেছে। এ বোর্ডেও আবেদনের শীর্ষে গণিত বিষয়ে। এ বিষয়ে আবেদনের সংখ্যা ৬ হাজার ২০৬টি। ইংরেজি প্রথমপত্রে ৩ হাজার ১৯৫ ও দ্বিতীয় পত্রে ২ হাজার ৯০৪ জন আবেদন করেছে।
কুমিল্লা বোর্ডে ১৬ হাজার ৮০৭ পরীক্ষার্থী ৩৬ হাজার ৭৮৪টি বিষয়ে আবদেন করেছে। এর মধ্যে গণিতে ৪ হাজার ৯১১ জন, ইংরেজি প্রথমপত্রে ৪ হাজার ৫৫২ জন ও দ্বিতীয়পত্রে ৩ হাজার ৭ জন।
বরিশাল বোর্ডে ১৬ হাজার ৬৭৩ শিক্ষার্থী ২২ হাজার ১৫২ বিষয়ে আবেদন করেছে। তার মধ্যে গণিতে ৪ হাজার ৯১১ জন, ইংরেজি প্রথমপত্রে ৪ হাজার ৫৫২ ও দ্বিতীয়পত্রে ৩ হাজার ৭ জন রয়েছে।
এদিকে, চট্টগ্রাম বোর্ডে ২৩ হাজার ৩৮০ জন ৫০ হাজার ৫৩০টি বিষয়ে আবেদন করেছে। এ বোর্ডে গণিতে ৭ হাজার ৫৫ জন, ইংরেজি প্রথমপত্রে ৫ হাজার ৭৮২ ও দ্বিতীয়পত্রে ৩ হাজার ৬৫৪ জন আবেদন করেছে।
সিলেট বোর্ডে ১০ হাজার ৬৭৮ শিক্ষার্থী ২০ হাজার ৪৫৭টি আবেদন করেছে। তার মধ্যে গণিতে পাঁচ হাজার ৯৫ জন, ইংরেজিতে ৩ হাজার ৫০৩ জন রয়েছে।
যশোর বোর্ডে মোট আবেদন করেছে ৩৮ হাজার ৫৩ জন। তার মধ্যে গণিতে ৫ হাজার ৫৭৯, ইংরেজি প্রথমপত্রে ৪ হাজার ২ জন ও দ্বিতীয়পত্রে ৩ হাজার ৬৮০।
মাদরাসা বোর্ডে মোট আবেদন ৩৫ হাজার ৮৮৯টি পত্রের মধ্যে আবেদনকারী ২১ হাজার ৭৫৬ জন। এ বোর্ডে গণিতে আবেদন ১১ হাজার ৭৯০ এবং ইংরেজিতে ১ হাজার ৮৪৭টি। কারিগরি বোর্ডে মোট আবেদনকারীর সংখ্যা ১৩ হাজার ৬৪৪ জন। তারা মোট ২৪ হাজারের বেশি বিষয়ে আবেদন করেছে। গত বছর ১০ বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার ফল পুনর্নিরীক্ষার জন্য ২ লাখ ৬৬ হাজার ৩৪০ জন আবেদন এসেছিল।
বিধান অনুযায়ী পুনঃনিরীক্ষণে সাধারণত ৪টি বিষয় দেখা হয়। এগুলো হলো, উত্তরপত্রে সব প্রশ্নে সঠিকভাবে নম্বর দেয়া হয়েছে কি-না, প্রাপ্ত নম্বর গণনা ঠিক হয়েছে কি-না, প্রাপ্ত নম্বর ওএমআর শিটে উঠানো হয়েছে কি-না এবং প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী ওএমআর শিটে বৃত্ত ভরাট সঠিকভাবে করা হয়েছে কি-না সেসব বিষয় পরীক্ষা করেই পুনঃনিরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়।
আন্তশিক্ষা শিক্ষা বোর্ড ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, গত বছরের চাইতে এবার এসএসসি পরীক্ষার ফল যাচাইয়ে শূন্য দশমিক ২৮ শতাংশ আবেদন কম হয়েছে। তবে সংখ্যাগত দিক থেকে এবার আবেদন বেশি রয়েছে। অনেকে জিপিএ-৫ পেতে কিছু কম নম্বর কম পাওয়ায় তারা আবেদন করেছে। পুনঃনিরীক্ষায় মাধ্যমে তাদের ফল পরিবর্তন হতে পারে সে কারণে অনেকে আবেদন করেছে। আগামী ৩১ মে পুনঃনিরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে বলেও তিনি জানান।
এবার এসএসসি ও সমমানে গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৬২৯ জন শিক্ষার্থী। ১০ বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ২৬ হাজার ৫৭৪ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৫ লাখ ৭৬ হাজার ১০৪ জন। এবার ইংরেজি ও বিজ্ঞান বিষয়ে পাশের হার তুলনামূলক কম।
এমএইচএম/এমআরএম/আরআইপি