পরীক্ষা শুরুর আগেই পরীক্ষার্থীদের হাতে প্রশ্নপত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৩৪ পিএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

পরীক্ষা শুরুর নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রশ্নপত্র চলে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের হাতে। কেন্দ্রে প্রবেশের আগেই পরীক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্র দেখে কেন্দ্রে যাচ্ছেন। এছাড়া প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি স্বীকার করেছেন সয়ং ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারাও।

এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার পঞ্চম দিন শনিবার সাধারণ আট বোর্ড ও মাদরাসা বোর্ডে গণিত (আবশ্যিক), কারিগরি বোর্ডের অধিনে রসায়ন-২ পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

পরীক্ষা শুরুর আগে রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের একটি গলিতে কয়েকজন পরীক্ষার্থীকে আলাদা আলাদাভাবে কয়েকটি গ্রুপ করে জটলা বেধে থাকতে দেখা যায়। কাছে যেতেই দেখা যায় একটি মোবাইলকে ঘিরে অন্তত ৫-৭ জন পরীক্ষার্থীর জটলা। এভাবে আলাদা আলাদা কয়েকটি গ্রুপ জটলা বেধে ফেসবুকে পাওয়া প্রশ্ন এবং উত্তর খুঁজছেন। মতিঝিলে টিঅ্যান্ডটি স্কুলের সামনেও দেখা যায় একই চিত্র।

এর আগে সকাল ৮ টা ৫৯ মিনিটে হোয়াটসঅ্যাপের ‘ssc ফ্রি প্রশ্নের দোকান’ নামের একটি গ্রুপে গণিতের বহুনির্বচনী অভীক্ষার ‘খ’ সেট প্রশ্নপত্র পাওয়া যায়। এর সঙ্গে ছিল হাতে লেখা উত্তরপত্র। প্রশ্নপত্রটি ফারহান আদনান নামে একটি আইডি থেকে গ্রুপে দেয়া হয়। একই গ্রুপ থেকে উত্তরপত্রও দেয়া হয়।

এরপর থেকে ফেসবুকসহ অন্যান্য সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নপত্রটি ছড়িয়ে পড়ে। পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থীদের কাছে পাওয়া প্রশ্নের সঙ্গে ওই প্রশ্নের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

এদিকে মতিঝিলের টিএনটি স্কুল কেন্দ্রের সামনে থেকে এক অভিভাবক এ প্রতিবেদককে ফোনে সকাল সাড়ে ৯ টায় জানান, ‘এখানে প্রশ্নফাঁসের স্বর্গরাজ্য চলছে। পরীক্ষার্থীরা মোবাইলে প্রশ্ন দেখছে। অভিভাবকরাও উঠে পড়ে লেগেছে। এ পরিবেশ আমার আর ভালো লাগছে না। এ কোন যুগে এসে পড়লাম।’

আজিমপুর সরকারি গার্লস স্কুলের চিত্রও একই। এখানে গিয়ে দেখা যায় সকাল সাড়ে ৯টার পরেও কয়েকজন পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে প্রবেশ করছে। স্কুলের সামনে প্রকাশ্যেই চলছে মোবাইলে প্রশ্ন দেখার মহড়া।

এদিকে, প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় অভিভাবকরা রীতিমত ক্ষুব্ধ। এক অভিভাবক জানান, প্রতিদিন এসব দেখতে আর ভালো লাগে না। সন্তানরা তো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আমরা কাকে বলবো এসব কথা। ওদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব টেনশনে থাকি।

প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি স্বীকার করে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) শাহেদুল খবির শাহেদ জাগো নিউজকে বলেন, সকাল ৯টার পর আমরা প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ পেয়েছি। যে সকল লিঙ্কে প্রশ্ন পাওয়া গেছে তা আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও বিটিআরসিতে দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী প্রশ্নফাঁস চক্র সনাক্ত করেছে। আগামী দু-তিন দিনের মধ্যেই অপরাধীদের আটক করা হবে বলেও জানান তিনি।

এমএইচএম/এএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।