রাজশাহীতে হাজতির আত্মহত্যার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে জনি নামের এক হাজতির আত্মহত্যার ঘটনায় এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৩/৪ দিনের মধ্যে আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ উল্লেখ করে রিপোর্ট দেয়ার জন্য বলঅ হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের ডিআইডি প্রিজন্স বজলুল রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জাগো নিউজকে এ তথ্য জানান।
তদন্তকালে তিনি আত্মহননকারী হাজতি জনির সঙ্গে মহানন্দা সেলে থাকা কয়েকজন হাজতির সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন।
এসময় তার সঙ্গে থাকা হাজতিরা জানিয়েছেন, জনির বউ তাকে তালাক দিয়েছিলো। আর সেই তালাকনামা তার পকেটেই ছিলো। গলায় ফাঁস দেয়ার আগে জনি সেই তালাকনামাটি একজন হাজতিকে দিয়ে পড়তে বলেছিলেন। তালাকের কারণ ও সমস্ত বিষয়গুলো শোনার পর সে অনেক হতাশ হয়ে গিয়েছিলো বলে জানায় ওই হাজতি। তারপর থেকে তাকে অনেক হতাশাগ্রস্থ দেখাচ্ছিলো। আর এ কারণেই সে আত্মহত্যা করেছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
একজন হাজতি যখন আদালত থেকে কারাগারে প্রবেশ করে তখন তাকে সম্পূর্ণ তল্লাশি করে ভেতরে প্রবেশ করানো হয়। তাহলে তার কাছে তালাকনামার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাগজসহ কেন ভেতরে পাঠানো হলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো জানান, তল্লাশিকালে তার কাছে তালাকনামাসহ কিছু কাগজপত্র পাওয়া গিয়েছিলো। বাকি কাগজপত্র নেয়া হলেও একান্ত অনুরোধে তালাকনামাটি তার কাছে রাখার অনুমতি দিয়েছিলো কারা কর্তৃপক্ষ। হয়তো এ ভুল সিদ্ধান্তেই আজ এ ঘটনার জন্ম দিয়েছে। আর এ ঘটনায় প্রধান কারারক্ষীসহ মহানন্দা সেলের দায়িত্বে থাকা দুই কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
তবে নিহতের বাবা মুক্তার হোসেন ভুট্টুর দাবি, তার ছেলে জনিকে শনিবার দুপুরে রাজপাড়া থানার এক কনস্টেবল বিকাশ নামের এক ব্যক্তির বাসায় স্বর্ণের চেইন চুরি অভিযোগে তাকে বাসা থেকে আটক করে। পরে তাকে থানায় নিয়ে গিয়ে পুলিশি হেফাজতে বেধড়ক মারপিট করলে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে দ্রুত চুরি মামলায় আটক দেখিয়ে শনিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায় রাজপাড়া থানা পুলিশ। পরে সে জেলহাজতে বিনা চিকিৎসায় মারা যায়।
এ ব্যাপারে রাজপাড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদি হাসান জাগো নিউজকে জানান, জনি একজন পেশাদার চোর। ওই এলাকার বিকাশ নামের এক ব্যক্তির বাসা থেকে স্বর্ণের চেইন চুরির ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হলে পুলিশ জনিকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। তাকে থানায় কোন ধরনের নির্যাতন করা হয় নি বলে জানান তিনি। রোববার ভোর ৫টার দিকে কারাগারের ভিতরে আত্মহত্যা করেন ওই হাজতি।
শাহরিয়ার অনতু/এসএস/এমএস