ইস্কাটনে জোড়া খুন : রনির অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল চেয়ে ডিবির চিঠি


প্রকাশিত: ০৭:০৪ এএম, ০৬ জুলাই ২০১৫

এমপিপুত্র বখতিয়ার আলম রনির ব্যবহৃত দুটি অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন জানিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। রনির পিস্তলের গুলিতেই অটোরিকশাচালক ও রিকশাচালক নিহত হওয়ার যাবতীয় প্রমাণ আদালতে উপস্থাপনের পর অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল জন্য আবেদন জানিয়ে এ চিঠি পাঠালো গোয়েন্দা পুলিশ।

সোমবার সকালে ডাক যোগে চিঠিটি পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক দীপক কুমার দাস।

তিনি জানান, রনির দুটি অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলের আবেদন সোমবার সকালে ডাক যোগে ঢাকা জেলা প্রশাসেকের কারর্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
 
এরআগে গত ৪ জুন মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও এমপি পিনু খানের ছেলে বখতিয়ার আলম রনির পিস্তল দুটি ডিবি পুলিশ জব্দ করে।
 
এব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) দীপক কুমার দাস বলেন, হত্যাকাণ্ডে একটি পিস্তল ব্যবহৃত হলেও দুইটি অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলের আবেদন করা হচ্ছে। কারণ হিসেবে তিনি জানান, অস্ত্র ব্যবহারে রনি উপযুক্ত নন। কারণ তিনি মাদকাষক্ত ও অপ্রকৃতিস্থ।

পিস্তলের ব্যালাস্টিক প্রতিবেদন ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ঠিকানা যাচাই প্রতিবেদন পাওয়ার পর লাইসেন্স বাতিলের আবেদন করা হয়েছে।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বখতিয়ারের লাইসেন্স করা কালো-সিলভার রঙের বিদেশি পিস্তলের গুলিতে জোড়া খুন হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হতে পিস্তলটি পরীক্ষার জন্য সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে। সিআইডি তথ্যও নিশ্চিত করেছে।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ১৩ এপ্রিল রাত পৌঁনে ২টার দিকে রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে একটি কালো রঙের প্রাডো গাড়ি থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে তাতে অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী ও রিকশাচালক আবদুল হাকিম আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তারা।
 
এ ঘটনায় নিহত হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম অজ্ঞাত পরিচয়ে কয়েক জনকে আসামি করে ১৫ এপ্রিল রাতে রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
 
২৪ মে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগকে (ডিবি)। তদন্তে হত্যার ঘটনায় বখতিয়ার ও তাঁর গাড়িচালক ইমরান ফকিরকে শনাক্ত করে ডিবি। ৩১ মে এলিফ্যান্ট রোডের বাসা থেকে বখতিয়ার আলম রনিকে আটক করে ডিবি পুলিশ। পরে গাড়িচালক ইমরান ফকিরকে গ্রেফতারর করা হয়।
 
ন্যাম ভবন থেকে জব্দ করা হয় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রনির মায়ের নামে আনা প্রাডো গাড়িটি।
 
এরপর আদালতে আত্মসমর্পণ করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন রনির অন্য বন্ধুরাও। রনিকে ২ জুলাই চার দফায় ১৪ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্তকর্তা দীপক কুমার বলেন, রিমান্ডে রনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়নি। এছাড়া তাকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসা করলেও সে অসুস্থার ভান ধরছে।

এদিকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি না দিলেও দোষী প্রমাণ করতে সমস্যা হবে না বলে মনে করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
 
তিনি বলেন, ‘বস্তুগত তথ্য ও পযাপ্ত সাক্ষপ্রমাণ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দী অনুযায়ী এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, বখতিয়ার আলম রনির পিস্তল থেকে ছুড়া গুলিতেই রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে দুজন নিহত হয়েছে।

জেইউ/এসকেডি/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।