৯ মেডিকেল-ডেন্টালে ভর্তি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের গুঞ্জন

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৬:৪৩ এএম, ২৯ অক্টোবর ২০১৭

বেসরকারি নয়টি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জোর গুঞ্জন উঠেছে। মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য ছাত্রী-ছাত্রীর সংখ্যানুপাতে শিক্ষক, শিক্ষা উপকরণ, ল্যাবরেটরিসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ঘাটতির কারণে সম্প্রতি ওই নয়টি প্রতিষ্ঠানে চলতি শিক্ষাবর্ষে (২০১৭-২০১৮) নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির ওপর স্থগিতাদেশ প্রদান করা হয়।

সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষজ্ঞদের সুনির্দিষ্ট মতামত ও প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ ৮টি মেডিকেল কলেজ ও ১টি ডেন্টাল কলেজের ওপর এ স্থগিতাদেশ প্রদান করা হলেও স্বাস্থ্য সেক্টরে জোর গুঞ্জন উঠেছে ‘গোপন সমঝোতা’য় অচিরেই সব কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তির আদেশ প্রত্যাহার হচ্ছে!

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের চিকিৎসাশিক্ষা-২ শাখার উপসচিব বদরুন নাহার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিতকৃত মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজসমূহ পুনঃপরিদর্শন সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি হয়।

নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিতকৃত কলেজগুলো হলো- রংপুরের নর্দান প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ, গাজীপুরের সিটি মেডিকেল কলেজ, ঢাকার আদ্-দ্বীন বসুন্ধরা মেডিকেল কলেজ, আশিয়ান মেডিকেল কলেজ, সাহাবউদ্দিন মেডিকেল কলেজ, নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, কেয়ার মেডিকেল কলেজ, আইচি মেডিকেল কলেজ ও সাফেনা উইমেন্স ডেন্টাল কলেজ।

নির্দেশনায় বলা হয়, ইতিপূর্বে স্থগিতকৃত মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের মধ্য থেকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের লক্ষ্যে আবেদনকৃত নয় প্রতিষ্ঠান সরেজমিন পরিদর্শন করে পরবর্তী তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন প্রদান করতে বলা হয়েছে।

এ লক্ষ্যে বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালার (সংশোধিত) ৪.২ ধারায় কমিটির সঙ্গে আরও তিনজন বিশেষজ্ঞকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তারা হলেন- বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ ও দৈনিক আমাদের অর্থনীতি সম্পাদক নাইমুল ইসলাম খান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক চিকিৎসাশিক্ষা বিশেষজ্ঞ বলেন, বেসরকারি প্রতিটি মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তিপ্রতি ১৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা (কলেজ ভেদে) আদায় করা হয়। স্থগিত মেডিকেল ও ডেন্টালের প্রতিটিতে কমপক্ষে ৫০টি করে আসন রয়েছে। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারলেই কোটি কোটি টাকা আয় হয়।

তারা বলেন, ব্যাপক ঢাক-ঢোল পিটিয়ে নয়টি প্রতিষ্ঠানে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করার পর স্বল্পসময়ের মধ্যে ওইসব প্রতিষ্ঠান পুনঃপরিদর্শনই গোপন সমঝোতার ইঙ্গিত বহন করে। হঠাৎ করে ইউটার্ন সন্দেহজনক মনে করছেন তারা।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গোপন সমঝোতার মাধ্যমে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হচ্ছে- এ তথ্য সঠিক নয়। স্বচ্ছতার স্বার্থে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ স্থাপন নীতিমালা কমিটির সঙ্গে কো-অপ্ট করে আর তিন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তারা পরিদর্শন করে ইতিবাচক প্রতিবেদন দিলেই শুধু চলতি বছর নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি প্রদানে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হবে।

এমইউ/বিএ/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।