পরীক্ষার টেবিলে চোখ হারানো সিদ্দিকুর

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:২৭ পিএম, ২৪ অক্টোবর ২০১৭

শাহবাগে পুলিশের টিয়ারশেলে চোখ হারিয়েও লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমান। স্বপ্নচূড়ায় পৌঁছাতে নিজের অদম্য ইচ্ছা আর আত্মবিশ্বাস নিয়ে সিদ্দিকুর আগের মতোই ছুটে চলছেন। তাই মঙ্গলবার অনার্স তৃতীয় বর্ষের প্রথম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তিনি।

মঙ্গলবার শুরু হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর। তবে নিজে লিখে নয়, পরীক্ষা দিচ্ছেন শ্রুতি লেখকের সাহায্যে। তাকে পরীক্ষায় সহযোগিতা করছেন একই কলেজের দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন মৌ।

পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করে সিদ্দিকুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আজ আমাদের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পরীক্ষায় অংশ নিলাম। তবে পূর্বের মতো নিজে লিখে পরীক্ষা দিতে পারিনি। শ্রুতি লেখকের সাহায্যে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। এরপরও পরীক্ষা ভালো হয়েছে। দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।

এদিকে শ্রুতি লেখক হিসেবে সিদ্দিকুরের পরীক্ষা দিতে পারায় নিজের মধ্যে অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সাদিয়া আফরিন মৌ।

তিনি বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে প্রথম দেখি সিদ্দিকুর ভাইয়ের জন্য একজন শ্রুতি লেখক লাগবে। তখনই সিদ্ধান্ত নেই কাজটি আমি করব। সিদ্দিকুর ভাই শিক্ষার্থীদের জন্য আন্দোলন করে নিজের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। তার হয়ে পরীক্ষা দিতে পারায় অনেক ভালো লাগছে।

গত ২ অক্টোবর সিদ্দিকুর রহমান অ্যাসেনশিয়াল ড্রাগসের টেলিফোন অপারেটর হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। নিজেকে মানিয়ে নিয়ে স্বাভাবিকভাবে সিদ্দিকুর অফিসের কার্যক্রম সম্পন্ন করছেন।

গত ২০ জুলাই শাহবাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা রুটিনসহ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন করছিলেন। এ সময় পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেলে সিদ্দিকুর রহমান চোখে আঘাত পান। এরপর দেশে এবং বিদেশে চিকিৎসা হয় সিদ্দিকুরের। কিন্তু চোখ আর ভালো হয়নি।

পরে ২৮ আগস্ট স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সিদ্দিকুরকে চাকরি দেয়ার ঘোষণা দেন।

এমএইচএম/একে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।