স্নাতকে ভর্তি বঞ্চিত উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ হাজার শিক্ষার্থী

মুরাদ হুসাইন
মুরাদ হুসাইন মুরাদ হুসাইন , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:১০ এএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭
ফাইল ছবি

কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতায় বিপাকে পড়েছেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) প্রায় পঞ্চাশ হাজার শিক্ষার্থী। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক কোর্সে ভর্তিতে আবেদনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এসব শিক্ষার্থী।

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভারের সঙ্গে মিলে না যাওয়ায় পঞ্চাশ হাজার শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক কোর্সে আবেদন করতে গেলে তাদের আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে উভয় কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। দায়িত্বরত ব্যক্তিরা শুধু একে অপরকে দোষারোপ করে তাদের বিদায় করে দিচ্ছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আবেদন করতে না পারায় হতাশ হয়ে পড়েছেন এসব শিক্ষার্থী।

চলতি বছর এইচএসসি পাস করা মো. এমদাদুল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, আমি ২০১২ সালে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে এসএসসি কোর্সে ভর্তি হই। সেশনজটের কারণে ২০১৫ সালে এসএসসি কোর্স শেষ হয়। এরপর চলতি বছর ঢাকা বোর্ড থেকে এইচএসসি পাস করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ভর্তি আবেদন করার চেষ্টা করি। কিন্তু নানাভাবে চেষ্টা করেও আবেদন করতে পারছি না। এ নিয়ে উভয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স কোর্সের ডিন অধ্যাপক নাসির জাগো নিউজকে বলেন, অনার্স কোর্সের ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে বাউবি’র ২০১৪-১৫ সালের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু বাউবি’র রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বরে নানা অমিল থাকায় আমাদের সার্ভার সেসব আবেদন গ্রহণ করছে না। বাউবির রোল নম্বর ১১ ডিজিটের ও রেজিস্ট্রেশন নেই, এজন্য আমাদের সার্ভারে তাদের তথ্য পাওয়া যায় না।

তিনি বলেন, আমরা বাউবি কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি বারবার অবগত করেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে না নেয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে বাউবি’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এ মান্নান জাগো নিউজকে বলেন, অনেক আগে বাউবি’র এসএসসি ও এইচএসসি’র একটি ব্যাচ বাতিল হয়ে যাওয়ায় অন্যান্য বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে ফল প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে বাউবি শিক্ষার্থীরা অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি আমলে নিয়ে দুটি ব্যাচকে একসঙ্গে করেছি। এই দুটি ব্যাচের একসঙ্গে পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। আগামী বছর থেকে বাউবি শিক্ষার্থীদের আর এ সমস্যায় পড়তে হবে না।

বঞ্চিতদের বাউবি’র অর্নাস ও ডিগ্রি কোর্সে ভর্তির আহ্বান করে উপাচার্য বলেন, কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাউবি শিক্ষার্থীদের অবহেলার চোখে দেখছে। এটি নাগরিক অধিকার লঙ্ঘন করার শামিল। কারো বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে বাউবি কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা নেবে।

উল্লেখ্য, গত ২৪ আগস্ট অনার্স কোর্সে ভর্তিতে অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর আবেদন গ্রহণ শেষ হবে।

এমএইচএম/এআরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।