অস্থিরতায় আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষকরা
রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষকদের সনদ যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালায়। এটিকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। এ কারণে অনেকে বিভিন্ন মহলে তদবির শুরু করেছেন বলে স্কুল সূত্র জানিয়েছে।
জানা গেছে, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মতিঝিল, বনশ্রী এবং মুগদা শাখায় বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে ৬৫৩ শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছে। শিক্ষার্থী রয়েছে ২৫ হাজারের বেশি। বেশ কিছুদিন ধরেই এ শাখাগুলোতে কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ভূয়া সনদে শিক্ষকতা করার অভিযোগ উঠছে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে প্রায় অর্ধশত শিক্ষক-শিক্ষিকা জাল সনদে চাকরি নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাধিক জ্যেষ্ঠ শিক্ষক জাগো নিউজকে বলেন, বিভিন্ন সময়ে অনেক শিক্ষক জাল বিএড-এমএড ও নিবন্ধন সার্টিফিকেট জমা দিয়ে যোগদান করেছেন। এসব শিক্ষকদের সনদ নিয়ে নানা বির্তক উঠছে। বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সনদ যাচাইয়ের গুজব উঠায় অনেকের ঘুম হারাম। তাদের কেউ কেউ চাকরি বহাল রাখতে উচ্চ মহলে তদবির শুরু করেছেন।
সূত্র জানায়, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ শিক্ষকদের ভূয়া সনদের অভিযোগের বিষয়টি আমলে নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। স্কুলের শিক্ষকের সনদ যাচাই করতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরকে (মাউশি) নির্দেশনা দেয়া হতে পারে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়ে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে শিক্ষকের এমপি বাতিলসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (মাধ্যমিক) সালমা জাহান বলেন, প্রতিষ্ঠানটির অনেক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভূয়া সনদে চাকরি নেয়ার অভিযোগ পেয়েছি। মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সার্টিফিকেট যাচাই করা হতে পারে। তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
এর আগে গত মে মাসে এক অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্কুলের মতিঝিল শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছালাম খানের বিএড সনদ ভূয়া বলে প্রমাণ পায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর মাউশি ছালাম খানের এমপিও স্থগিত করে। একই সঙ্গে তাকে চাকরিচ্যুত করতে ম্যানেজিং কমিটিকে চিঠি দেয় ঢাকা শিক্ষাবোর্ড। এ নির্দেশনার বিরুদ্ধে ছালাম খান হাইকোর্টে রিট করলে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আদালত।
এ বিষয়ে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহানা আরা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, জাল সনদে কোনো শিক্ষকের চাকরি হয়েছে এমন তথ্য জানা নেই। তবে বিভিন্ন সময়ে এ বিষয়ে অভিযোগ উঠায় কিছু শিক্ষকের সনদ যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
তিনি বলেন, যদি কারো সনদ ভূয়া হয় তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও যদি শিক্ষকদের সনদ যাচাই করতে চায় তাদের সার্বিক সহায়তা করা হবে বলেও তিনি জানান।
এমএইচএম/এএইচ/আরআইপি