বিএনপির চরিত্র বদলাবে না : প্রধানমন্ত্রী


প্রকাশিত: ০৪:৩৫ পিএম, ২৩ মে ২০১৫

দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একটা কথা মনে রাখবেন, দুর্যোগ একবার এসে চলে গেলে আর যে আসবে না, এটা কিন্তু নয়। বার বার আঘাত করতে পারে। কারণ হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে বিএনপি নামক দলটির জন্ম। হত্যা-ষড়যন্ত্র করাই তাদের স্বভাব। তাদের এ চরিত্র কিন্তু বদলাবে না।

শনিবার বিকেলে রাজধানীর হাজারীবাগের ওয়াবদা বাঁধে সুধী সমাবেশে তিনি এ সব কথা বলেন। হাজারীবাগ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের উদ্বোধন এবং শহীদ শামসুন্নেছা আরজু মনি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা আরো বলেন, তারা (বিএনপি) সৃষ্টি করতে পারে না, ধ্বংস করতে পারে। এ জন্য দলের প্রত্যেক নেতাকর্মী ও দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দেশের উন্নয়নের জন্য কারা কাজ করে তা জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা করে জনগণকে নির্যাতন করেছে। মানুষ তাদের ভোট দেবে কেন? সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয়ই প্রমাণ করে দেশে গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত এবং সাধারণ মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচতে চায়, ধ্বংস চায় না।

তিনি বলেন, সিটি নির্বাচনে আমাদের দল সমর্থিত প্রার্থীদের বিপুল ভোটে বিজয়ী করার জন্য ঢাকাবাসীকে ধন্যবাদ জানাই। এর আগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ঘোষণা দিলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না। পরে সিটি নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করল। ভোটগ্রহণের দিন যখন বুঝতে পারল জনগণ ভোট দেবে না, তখন আবার তারা ভোট বর্জন করল।

তিনি আরো বলেন, মানুষের ওপর যেভাবে অত্যাচার করেছে, মানুষ কেন ওদের ভোট দেবে? শ্রমজীবী, শিশু ও নিরীহ মানুষ সবাই আতঙ্কিত ছিলেন। এবারের সিটি নির্বাচনে আমাদের প্রত্যেক নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ ছিল বলেই তিন সিটিতে আমাদের প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের আন্দোলনের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ পুড়িয়ে মারা এর চেয়ে জঘন্য কাজ আর হতে পারে না। বিএনপি সে কাজও করেছে। বোমা বানাতে গিয়ে এই হাজারীবাগে যুবদল নেতা মারা গেছেন। ২০১৩ সালের নির্বাচন ঠেকানো ও ২০১৫ বিএনপি নেত্রী গুলশান অফিসে বসে ঘোষণা দিলেন আওয়ামী লীগ সরকার পতন না ঘটিয়ে তিনি ঘরে ফিরবেন না। পেট্রলবোমা দিয়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করলেন। কিন্তু জনগণের সমর্থন পায়নি বলে কোর্টে গিয়ে হাজিরাও দিয়েছেন, বাড়িও ফিরে গেছেন। এই অশুভ শক্তি আর যেন কখনো মাথাচারা দিয়ে উঠতে না পারে, সে জন্য দেশবাসীকে সব সময় সজাগ থাকতে হবে।

১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট ঘাতকের হাতে নিহতদের স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার সঙ্গে সবাইকে হত্যা করা হয়েছিল। আজকে যার নামে (শহীদ শামসুন্নেছা আরজু মনি) মা শিশু কল্যাণ কেন্দ্র করা হল, তিনি ছিলেন আমার ফুফাতো বোন, ছোটবেলার খেলার সাথী। তাকে যখন হত্যা করা হয়, তখন তাপস ছিলেন তিন বছরের ছোট শিশু। ওর বোঝার বয়স হয়নি।

ফায়ার সার্ভিসের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির জনকের পথ অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকার সেবা খাতের উন্নয়ন করে যাচ্ছে। ১৯৯৬ সালে প্রথম যখন ক্ষমতায় আসি, তখনই ফায়ার সার্ভিসের উন্নয়নে কাজ শুরু করি। প্রতিটি উপজেলায় ন্যূনতম একটি করে ফায়ার সার্ভিস করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। ২০০৯ সালে ৮০টি নতুন ফায়ার সার্ভিস স্টেশন চালু করা হয়।

তিনি বলেন, দুই মেয়াদে এখন পর্যন্ত ২৮৫টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। নির্মাণাধীন রয়েছে ৫৪৯টি। বর্তমানে ৮ হাজার ২৫৮ জন জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে। গার্মেন্টশিল্প অধ্যুষিত এলাকায় মডার্ন ফায়ার সার্ভিস, ডুবুরি ইউনিট সম্প্রসারণ, আধুনিক যন্ত্রপাতি বসানো, নতুন ভবন, যন্ত্রপাতি ক্রয় এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি ও রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেত্রী দাবি করেন, তিনি কয়েকবারের প্রধানমন্ত্রী। তিনি তো দেশের উন্নয়নের কিছুই করেননি। লুটপাট, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস সৃষ্টি ছাড়া তিনি জাতিকে কিছুই দিতে পারেননি। আমরা দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে দেশের উন্নয়নে কাজ করছি।

স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বরাষ্ট্র সচিব ড. মোজাম্মেল হক, স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম ও ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান বক্তব্য রাখেন। এ সময় মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, দক্ষিণ সিটির মেয়র ও সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এসএইচএস/আরএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।