৩০ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুর্যোগ কবলিত


প্রকাশিত: ০৪:১৩ পিএম, ২১ মে ২০১৭

সারাদেশে প্রায় ৩০ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুর্যোগ কবলিত। এ তালিকায় আছে ১১ হাজার ৭৪৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে ২৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অচল হয়ে পড়ে। যার মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান ৩৪৭টি ও বেসরকারি ১১ হাজার ৩৯৮টি রয়েছে। 

বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) বার্ষিক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। আজ রোববার ব্যানবেইস কার্যালয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। ১০টি ক্যাটাগরিতে সারাদেশে এক লাখ ৬৭ হাজার ৪৫৪টি সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের উপর জরিপ চালিয়ে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৬ সালে প্রাথমিক স্কুলে ঝরে পড়ার হার ১৯ শতাংশ, মাধ্যমিকে ৩৮ দশমিক ৩০ শতাংশ আর উচ্চমাধ্যমিকে ২০ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।

ফলে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হারে প্রাথমিক পর্যায় থেকে মাধ্যমিকে বাড়ছে। কমছে ছেলে শিক্ষার্থীর হার। মাধ্যমিক পর্যায়ে ছাত্রদের শতকরা হার ৪৬ শতাংশ আর মেয়েদের ৫৪ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্চ মাধ্যমিকে ও উচ্চশিক্ষায় মেয়েদের সংখ্যা কম। উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ ও উচ্চশিক্ষায় ৪০ শতাংশ মেয়ে রয়েছেন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী শিক্ষক- শিক্ষার্থীর অনুপাত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে ৪০জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন একজন।

প্রতিবেদন প্রসঙ্গে বিশ্লেষকরা বলছেন, ঝরে পড়ার হার রোধ ও নারী-পুরুষ শিক্ষকের হারে সমতা আনা না গেলে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে হিউম্যান ক্যাপিটাল ইনডেক্স (এইচসিআই) র্যাং কিংয়ে আনা সম্ভব হবে না।

২০১৬ সালের এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান সরকার কারিগরি শিক্ষাকে অগ্রসর করতে নানা উদ্যোগ নিলেও তাতে সুফল আসছে না। বর্তমানে কারিগরি শিক্ষায় মাত্র ১৩ শতাংশ শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত। এখানে ছাত্রীর হার ২৪ শতাংশ। আর নারী শিক্ষক রয়েছেন ২১ শতাংশ।

অন্যদিকে, সবস্তরের শিক্ষাক্ষেত্রে নারী শিক্ষকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কম। মাধ্যমিকে প্রায় ২৬ শতাংশ, কলেজে ২৩ শতাংশ, মাদরাসায় ১৩ শতাংশ, কারিগরিতে ২১ শতাংশ, উচ্চশিক্ষায় ২৬ শতাংশ নারী শিক্ষক রয়েছেন।

এই বার্ষিক প্রতিবেদন প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ব্যানবেইসের জরিপের ফলে শিক্ষা ব্যবস্থার বাস্তব চিত্র উঠে আসে। আগের চাইতে এ প্রতিষ্ঠানের অনেক সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

মাধ্যমিক স্তরে ঝরে পড়ার হার তুলনামূলকভাবে না কমার বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে নিবিড় পর্যক্ষেণ প্রয়োজন। প্রতিবেদনের সব বিষয় নিবিড়ভাবে পর্যাবেক্ষণ করা হবে।

ছেলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমার বিষয়টি উদ্বেগজনক উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, আমরা ছেলে-মেয়ের সমতা চাই, কম বা বেশি হওয়াটা ইতিবাচক নয়।

এদিকে প্রতিবেদনে আশার আলো হচ্ছে, বর্তমানে ৭০ শতাংশ শিক্ষক নানাভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, প্রশিক্ষিত নারী শিক্ষকের সংখ্যা ৬৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ, ছাত্রীদের জন্য আলাদা টয়লেট ব্যবস্থা রয়েছে ৯৫ দশমিক ৫০ শতাংশ স্কুলে, ৮৪ দশমিক ৯৪ শতাংশ স্কুলে কম্পিউটার, ৭৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ স্কুলে ইন্টারনেট সংযোগ, ৯৭ দশমিক ৩২ শতাংশ স্কুলে বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা, ৭৬ দশমিক এক শতাংশ স্কুলে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম এবং ২৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ স্কুলে রান্নার ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।

প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, মাদরাসা ও কারিগরি বিভাগের সচিব আলমগীর হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ওয়াহেদুজ্জামান, ব্যানবেইস পরিচারক মো. ফসিউল্লাহ্ এবং বিশিষ্ট শিক্ষাবিদরা।

এমএইচএম/জেডএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।