ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড


প্রকাশিত: ১০:১৯ এএম, ০৮ মে ২০১৭
ফাইল ছবি

ফল বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড। চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় এ বোর্ড থেকে খারাপ করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইতোমধ্যেই কারণ দর্শানোর চিঠি দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো সরেজমিন পরিদর্শনের মাধ্যমে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবে বোর্ড। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষকদের দায়িত্বে অবহেলা, মানসম্মত শিক্ষক সঙ্কট ও সৃজনশীল পদ্ধতির উপর দুর্বলতার কারণে এবার কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি পরীক্ষার ফলে বিপর্যয় নেমেছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণিত ও ইংরেজি ভীতি বেশি।

এ কারণে প্রায় ৩৫ ভাগ পরীক্ষার্থী গণিতে এবং প্রায় ৩০ ভাগ পরীক্ষার্থী ইংরেজি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে। পরীক্ষার্থী এই দুই বিষয়ে বেশি অকৃতকার্য হওয়ায় গড় ফলাফলে প্রভাব পড়েছে। এ ছাড়া খারাপের অনুপাত শহরের চাইতে মফস্বলে বেশি।

এ বিষয়ে কুমিল্লা বোর্ডের আওতাভুক্ত একাধিক জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের গণিত, ইংরেজি ও বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন এ প্রতিবেদক। শিক্ষকরা জানান, এ বছর গণিতে সৃজনশীল প্রশ্ন সরবরাহ এবং তার উত্তর দেয়ার পদ্ধতি গত বছরের চেয়ে ভিন্ন ছিল। ভালো শিক্ষক সংকট থাকায় বিজ্ঞান ও ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষার্থীরা খারাপ করেছে।

তারা আরও জানান, গত বছর সৃজনশীল পরীক্ষা পদ্ধতি অনুসারে প্রথমে সাবজেক্টটিভ ও পরে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নপত্রের উত্তর দিত শিক্ষার্থীরা। তবে এ বছর আগে নৈর্ব্যক্তিক ও পরে সাবজেক্টিভ উত্তর দিতে হয়েছে। এ ছাড়া নম্বরেও পরিবর্তন এসছে। গত বছর নৈর্ব্যক্তিকে নম্বর ছিল ৪০, তবে এ বছর তা কমিয়ে ৩০ করা হয়েছে। প্রশ্নপত্রের উত্তরদানে এসব পরিবর্তনের কারণে শিক্ষার্থীরা গতি হারিয়ে ফেলেছিল।

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল খালেক বলেন, হঠাৎ কুমিল্লা বোর্ডের ফল পতিত হওয়ায় আমরা হতাশ। কারণ জানতে ও তার সমাধানে আমরা তালিকাভুক্ত বিদ্যালয়গুলোকে চিঠি দিয়েছি। তাদের জবাব আসার পর কোনো সমস্যা থাকলে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে তা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে ভালো মানের শিক্ষক সঙ্কটই ফল খারাপের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভালো শিক্ষকরা শহরমুখী হওয়ায় মফস্বল পর্যায়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষকের সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে।

এ ছাড়া মডেল পদ্ধতিতে ফল মূল্যায়ন করায় ফল পতনে কিছু প্রভাব রয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।

গত ৪ মে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এবার সারাদেশে ১৪ লাখ ৩১ হাজার ৭২২ শিক্ষার্থী পাস করেছেন; যার হার ৮০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৪ হাজার ৭৬১ জন।

পাসের হারে শীর্ষে রয়েছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড, ৯০ দশমিক ৭০ শতাংশ। অন্যদিকে ধস নেমেছে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে।

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে গত বছরের চেয়ে এবার পাসের হার কমে গেছে ২৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ। গত বছর যেখানে পাসের ছিল ৮৪ শতাংশ, সেখানে এ হার নেমে এসেছে ৫৯ দশমিক ০৩ শতাংশে।

এমএইচএম/আরএস/এনএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।