তিন বোর্ডে গণিতের প্রশ্ন ফাঁস


প্রকাশিত: ০৫:৫৭ পিএম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
ফাইল ফটো

চলমান এসএসসি পরীক্ষায় দ্বিতীয় বারের মত প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠেছে। ঢাকাসহ তিনটি বোর্ডের অধিনে রোববার অনুষ্ঠিত গণিত (আবশ্যিক) পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁসের এ অভিযোগ স্বয়ং ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যানও স্বীকার করেছেন।

ঢাকা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, গতকাল (শনিবার) রাতে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ এলে আমরা তা সংগ্রহ করে মিলিয়ে দেখেছি। সেটির সঙ্গে আজকের (রোববার) গণিত পরীক্ষার প্রশ্নের কোনো মিল নেই। তবে আজ (রোববার) সকাল সাড়ে ৯টার সময় কোনো এক কেন্দ্র থেকে একটি প্রশ্ন ফাঁস করা হয়েছে। সেটি হয়তো কারো কারো হাতে পৌঁছে গেছে।

তবে তিনি বলেন, ৩০ মিনিট আগে প্রশ্ন ফাঁস হওয়ায় পরীক্ষা কেন্দ্রে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। আমরা গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বিষটি খতিয়ে দেখছে। এর উৎস খোঁজা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েকজনকে আটক করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

প্রশ্ন ফাঁসকারীদের একটি শক্ত সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, অপরাধীদের অবশ্যই আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া হবে। পাশাপাশি পরবর্তী পরীক্ষাগুলোতে সচেতনতা আরও বাড়ানো হবে।

নাম প্রকাশ না করে পরীক্ষার্থীরা জানিয়েছে, মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্র আদান-প্রদান করা হয়ে থাকে। পরীক্ষা শুরুর অনেক আগেই ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ম্যাসেঞ্জারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন ছড়ানো হয়। আবার কেউ কেউ রাতেই ফেসবুকে প্রশ্নপত্র পোস্ট করেন।

তারা আরও বলেন, শনিবার দিনগত রাতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুঞ্জন শোনা যায়। রোববার সকালে আরেকটি প্রশ্নপত্র পাওয়া যায়। পরীক্ষা শেষে দেখা যায়, সেটির সঙ্গে পরীক্ষার হলে দেয়া মূল প্রশ্নপত্রের সঙ্গে মিল আছে। সৃজনশীল অংশে ৭০ নম্বরের প্রশ্নপত্রের সঙ্গে হুবহু মিল। বীজগণিত, জ্যামিতি, ত্রিকোণমিতি ও পরিমিতি এবং পরিসংখ্যান অংশের প্রত্যেকটি প্রশ্নের সঙ্গে হুবহু মিল আছে। শুধু তাই নয়, ৩০ নম্বরের এমসিকিউ অংশের সঙ্গেও পরীক্ষায় আসা সবক’টি প্রশ্নের মিল আছে।

এদিকে শুধু ঢাকা বোর্ডেই নয়, রাজশাহী বোর্ডেও রোববার গণিত (আবশ্যিক) পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও ফাঁস হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এরমধ্যে রাজশাহী বোর্ডের ‘ক’ সেটের মূল প্রশ্নপত্রের সঙ্গে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের মিল পাওয়া গেছে। তবে প্রশ্নপত্রের সেট ভিন্ন ছিল।

এছাড়া কুমিল্লা বোর্ডেও প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের আড়াইসিধা কেবি উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্র সচিব আশরাফ উদ্দিনকে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার বলেন, সাধারণত সকাল ৮টায় ট্রেজারি থেকে প্রশ্নপত্র বের করা হয়। ট্রেজারিতে বসেই প্রশ্নপত্রের ট্রাঙ্ক খোলা হয়। ট্রাঙ্কের ভেতর একটি খামে পরীক্ষার নির্দেশিকা থাকে। নিয়ম হচ্ছে, ওই নির্দেশিকায় ওইদিন কোন সেটে পরীক্ষা হবে সে বিষয় উল্লেখ থাকে। এরপর ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে নির্দেশিত প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়ার জন্য গ্রহণ করা হয়। বাকিটা ট্রেজারিতেই জমা থাকে।
 
তিনি আরও বলেন, যেহেতু রাতে একটি সেট প্রশ্ন সরবরাহ করে সকালে আরেকটি সেট সরবরাহ করা হয়েছে এবং ওই সেটেই পরীক্ষা হয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, সকালে নির্দেশিকা জানার পরই কেউ সঠিক প্রশ্ন সেট ফাঁসে ভূমিকা রেখেছে। তবে যেহেতু পরীক্ষার বেশি আগে ফাঁস হয়নি, তাই সবাই প্রশ্নপত্র পায়নি। গুটি কয়েক শিক্ষার্থী প্রশ্ন পেতে পারে।

এমএইচএম/আরএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।