‘ওড়না-আম খাওয়া ছাগল’ থাকছেই পাঠ্যবইয়ে


প্রকাশিত: ০৩:১৯ পিএম, ০৮ জানুয়ারি ২০১৭

প্রথম শ্রেণির ‘আমার বাংলা’ বইয়ে ছাগল গাছে উঠে আম খায় পরিবর্তন করা হচ্ছে না। এছাড়া এ বইয়ে জেন্ডার পার্থক্যকরণে ‘ওড়না’ সমাচারে পরিবর্তন আনা হচ্ছে না বলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে জানা গেছে। তথ্য মতে, নতুন পাঠ্যবইয়ের ভুল নিয়ে সারাদেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

এসব ভুলের কারণ নির্ধারণে গত ৬ জানুয়ারি এনসিটিবি একটি কমিটি গঠন করে। নতুন বছর নতুনভাবে পরিমার্জিত হয়ে আসা পাঠ্যবইয়ের ভুল ও বিকৃতির অভিযোগ পর্যালোচনায় এনসিটিবির সদস্য (অর্থ) অধ্যাপক কাজী আবুল কালামকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে অর্থাৎ ১৬ জানুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা রয়েছে।

এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. মান্নান বলেন, প্রাথমিকের প্রথম শ্রেণির বাংলা বইয়ে ১১ পৃষ্ঠায় ‘অ’ তে `অজ আসে’ ও `আম খাই’, সেখানে ছাগলের চিত্র ও ১৬ পৃষ্ঠায় ‘ও’ তে ‘ওড়না’ দেয়া হয়েছে; তাতে পরিবর্তন আনা হবে না। ছোট শিশুদের বর্ণ চেনার সঙ্গে মজা দিতে এসব ছবি জুড়ে দেয়া হয়েছে, যা দেখে ও পড়ে ছোটরা পড়ার সঙ্গে আনন্দ উপভোগ করবে।

স্বরবর্ণতে ‘ও’ এবং ‘অ’ দিয়ে একাধিক শব্দ ও সংযুক্ত ছবি না থাকায় তারা ছাগল ও ওড়না বিষয়গুলো নির্বাচন করেছেন।
 
তিনি বলেন, মূলত কমিটি বইয়ের বানান ভুল, অসঙ্গতি ও তৃতীয় শ্রেণির বাংলা বইয়ে কুসুমকুমারী দাশের ‘আদর্শ ছেলে’ কবিতার বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবে।

পঞ্চম শ্রেণির বইয়ে ‘ঘোষণা’ বানান ‘ঘোষনা’, ‘সুমদ্র’ বানান সঠিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে যেসব ভুল পাওয়া যাবে তা অবশ্যই সংশোধন করা হবে।

তৃতীয় শ্রেণির হিন্দু ধর্ম শিক্ষা বইয়ের শেষ পৃষ্ঠায় ইংরেজি নীতিবাক্য লেখা হয়েছে ভুল বানানে। কাউকে কষ্ট দিও না-এর ইংরেজি লেখা হয়েছে,  DO NOT HEART ANYBODY. এসব ভুল কেন হয়েছে কমিটি তাও খতিয়ে দেখবে বলে তিনি জানান।

তিনি আরও বলেন, বড় আকারের যেসব ভুল পাওয়া যাবে তা সংশোধন করে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হবে। শিক্ষকরা ক্লাসে পড়ানোর সময় সঠিকটি সংযুক্ত করে পড়াবেন।

পাঠ্যপুস্তকে বিতর্কিত বিষয় প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, সাম্প্রদায়িকতা ও অসঙ্গতির বিষয়গুলো নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় পাঠ্যপুস্তকের ভুল সংশোধনে কমিটি করা হয়েছে। এখন যদি তারা এসব ভুল সংশোধন না করেন তবে তাদের জবাবদিহি করতে হবে।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িকতার কথা মুখে বললেই হয় না, কাজে তার প্রমাণ দিতে হবে। তিনি অতি সত্বর পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে বিতর্কিত সব বিষয় পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, বছরের প্রথম দিন ৪ কোটি ৩৩ লাখ ৫৩ হাজার ২০১ জন শিক্ষার্থীর হাতে এবার ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার বই এবং শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করে সরকার। তার মধ্যে প্রায় ১২ কোটি প্রাথমিকের বই বিতরণ করা হয়।

এমএইচএম/ওআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।