প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৩৩ পিএম, ২৬ মার্চ ২০২৫

অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগো নিউজে গত ১৯ মার্চ ‘গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুল/বদলি ঘিরে অস্থিরতা, বিতর্কিতদের পদায়নে অভিভাবকদের ক্ষোভ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্কুলটির দুজন শিক্ষক। তারা হলেন—মো. সিকান্দার আলী খান ও মো. রাফি আহাম্মেদ। গত ২৩ মার্চ পাঠানো পৃথক দুটি চিঠিতে তারা এ প্রতিবাদ জানান।

প্রতিবাদলিপিতে সিকান্দার আলী উল্লেখ করেছেন, ‘সরকারি চাকরিতে বদলি স্বাভাবিক বিষয়। আমি ইতোপূর্বে ল্যাবরেটরি হাই স্কুলে অত্যন্ত সুনাম ও দক্ষতার সঙ্গে শিক্ষকতা করেছি।’ এরপরই অন্য একজন শিক্ষকের সম্পর্কে বিষোদগার করেছেন তিনি। আরও কয়েকজন শিক্ষকের নাম উল্লেখ করে তারা একটি চক্র গড়ে তুলেছেন বলে দাবি করেছেন সিকান্দার আলী। তাদের নিজের প্রতিপক্ষ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছে, আমি বিএ, বিএড পাস। অথচ আমি ইংরেজি সাহিত্যে এমএ এবং এমএড (প্রশাসন)। দেশের খ্যাতনামা আটটি বিদ্যালয়ে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে শিক্ষকতা করেছি বিধায় রয়েছে বহুমাত্রিক অভিজ্ঞতা।’ এছাড়া তিনি জুলাই বিপ্লবের পর জাতীয়তাবাদী ও ইসলামি আদর্শে বিশ্বাসী শিক্ষক সমিতির নেতা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে বলে দাবি করেছেন।

অন্যদিকে, শিক্ষক রাফি আহাম্মেদ তার দেওয়া প্রতিবাদলিপিতে উল্লেখ করেন, ‘সরকারি চাকরিতে বদলি নিয়মিত ও ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। আমি ইতোপূর্বে (প্রায় ১২ বছর) গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলে অত্যন্ত সুনাম ও দক্ষতার সঙ্গে শিক্ষকতা করেছি।’

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

প্রকাশিত সংবাদে তার ব্যক্তিগত ডকুমেন্ট ছাপা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে তিনি দাবি করেছেন, ‘আমার বিরুদ্ধ চারিত্রিক অভিযোগ, ছাত্রদের বলপূর্বক প্রাইভেট পড়ানো, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা ইত্যাদি সবই মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।’

আরও পড়ুন

সিকান্দার আলীর মতো তিনিও সুনির্দিষ্ট কয়েকজন শিক্ষকের নাম উল্লেখ করে তারা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন বলে অভিযোগ করেছেন রাফি আহাম্মেদ। যাদের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ তুলেছেন, তারা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা বলেও প্রতিবাদলিপিতে উল্লেখ করেছেন।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদকের বক্তব্য
জাগো নিউজে প্রকাশিত সংবাদটি শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশি মহাপরিচালকের দপ্তরে জমা পড়া একটি লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে করা হয়েছে। ১৬ জন অভিভাবক তাদের নাম-পরিচয় ও মোবাইল নম্বরসহ সেই অভিযোগে সই করেছেন। সংবাদের সব জায়গায় ওই অভিযোগপত্রে যা আছে, তা থেকে প্রকাশযোগ্য অংশটুকু তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে প্রতিবেদকের মনগড়া কোনো তথ্য উপস্থাপন করা হয়নি। এমনকি এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুই শিক্ষককে মাউশির মহাপরিচালক (ডিজি) ডেকে নিয়ে মৌখিকভাবে বিষয়গুলো জানতেও চেয়েছেন। এ কথা শিক্ষক রাফি আহাম্মেদ এ প্রতিবেদকের কাছেও স্বীকার করেছেন, যার ফোনকল রেকর্ড জাগো নিউজের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।

শিক্ষক সিকান্দার আলী ও রাফি আহাম্মেদ দুজনই তাদের প্রতিবাদলিপিতে স্কুলে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন। জাগো নিউজের সংবাদে মূলত সেই বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী ও নামি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের বদলি-পদায়ন নিয়ে যে অস্থিরতা সেটিই প্রতিবেদনের মুখ্য বিষয়।

সিকান্দার আলীর শিক্ষাগত যোগ্যতা ও ডিগ্রি নিয়ে যে তথ্য প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে, তা অভিভাবকদের দেওয়া অভিযোগের সূত্রে সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে। আর রাফি আহাম্মেদের প্রতিবাদলিপিতে সংবাদ মিথ্যা, ভিত্তিহীন দাবি করা হলেও তার সপক্ষে কোনো যুক্তি নেই। বরং তার বিয়ে, মামলা, জিডির সব ধরনের নথিপত্র জাগো নিউজের হাতে আছে। এছাড়া তিনি যে ব্যক্তিগত ডকুমেন্ট নিউজে ছাপার কথা উল্লেখ করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন, সেটি ভুয়া একটি তালাকের নোটিশ। যা তার প্রতারণার তথ্য-প্রমাণ হাজির করতে সংবাদে ব্যবহার করা হয়েছে। নকল বা ভুয়া ডকুমেন্ট কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্য বা নথি হতে পারে না।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবাদলিপিতে তারা নিয়মমাফিক বদলির কথা দাবি করলেও বদলির প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূতভাবে হয়েছে। আবেদন না করা সত্ত্বেও দুই শিক্ষককে ‘আপনার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বদলি করা হলো’ উল্লেখ করে নিয়মভঙ্গ করা হয়েছে। সিকান্দার আলী ও রাফি আহাম্মেদের তদবিরের জোরে এমন নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে বলেও যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।

এএএইচ/এমকেআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।