এপ্রিলে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন করবে বিডা
বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে এপ্রিলে ঢাকায় চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন করবে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। আগামী ৭ থেকে ১০ এপ্রিল এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘বিনিয়োগের সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক সেমিনারে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ৯ থেকে ১০ এপ্রিল ঢাকায় মূল অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। যেখানে প্রধান উপদেষ্টা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন।
ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিডার ব্যবসায়িক উন্নয়ন প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি।
মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, এফডিআই আকর্ষণে হিটম্যাপ নামে একটা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে ২০টি প্রতিষ্ঠানের মতামত নেওয়া হয়েছে। এর ভিত্তিতে ১৯টি অগ্রাধিকার খাত নির্বাচন করা হয়েছে। হিটম্যাপ অনুযায়ী এসব খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, আগামী ৭ থেকে ১০ এপ্রিল বিডা একটি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন আয়োজন করবে। ৭ থেকে ৮ এপ্রিল আমরা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ভিজিট করবো, যেন তারা বুঝতে পারেন কোথায় বিনিয়োগ করা উচিত। তারা স্বচক্ষে দেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন যে কোন ইকোনমিক জোন তার বিনিয়োগের জন্য ভালো হবে।
তিনি বলেন, ৯ থেকে ১০ এপ্রিল ঢাকায় মূল অনুষ্ঠান আয়োজন করলো। যেখানে প্রধান উপদেষ্টা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন। আমাদের যে ১৯টি সম্ভাবনাময় খাত রয়েছে তার মধ্যে যে ৯টি বেশি সম্ভাবনাময় তা নিয়ে কাজ করবো। একই সঙ্গে সেখানে একটি স্টার্টআপ সামিট হবে তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য। এছাড়া দেশের বৃহৎ উদ্যোক্তাদের আমরা স্বীকৃতি প্রদান করবো।
চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন আরও বলেন, বিভিন্ন ব্যবসায়ী মহল থেকে আমরা তাদের সমস্যা জানতে চেয়েছিলাম। সেখান থেকে আমরা ২১টি সমস্যা চিন্তিত করেছি, যা আগামী তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে সমাধানের চেষ্টা করছি। আমাদের এনার্জি, গ্যাসের সমস্যা সমাধান করতে কাজ করতে হবে। আমরা ১০০টি ইকোনমিক জোন না করে পাঁচটিতে ভালোভাবে ফোকাস করতে চাচ্ছি, যেন সেখানে সব ধরনের ইউটিলিটি দেওয়া যায়।
তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের জন্য যেন আন্তঃমন্ত্রণালয় এঙ্গেইজমেন্ট সহজ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি। আমরা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ১-২ বছরের জন্য ফেলোশিপের মত রিলেশনশিপ ম্যানেজার নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করছি। যারা এসময় সরকারের জন্য কাজ করবেন এবং পরে আবার নিজস্ব কর্মস্থলে যোগ দেবেন।
‘আমরা ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন এজেন্সি (ইপিএ) কমানোর জন্য কাজ করছি। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন যেন ইপিএ কমানো যায়। আসলে অনেকগুলো ইপিএ থাকলে বিনিয়োগকারীরা কনফিউজড হয়ে যান যে কোথায় যোগাযোগ করবেন। আমরা সবকয়টি ইপিএকে এক জায়গায় আনার চেষ্টা করছি।’
‘যে সেক্টরে সরকারের ব্যবসা করার দরকার নেই সেখান থেকে আগামী ৬ মাস থেকে ১ বছরের মধ্যে সরকার বের হয়ে যাবে। সেখানে সব ধরনের ইউটিলিটি আছে। আমরা বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের জন্য ব্যবসার সুযোগ দিতে পারি, যেন জায়গাগুলো ব্যবহৃত হয় এবং মেশিনারিগুলো কার্যকর থাকে। বিশেষত জুটমিল, কাগজ মিল, রাইস মিল ও সুগার মিলগুলো ব্যবসায়ীদের দিয়ে দেওয়া হবে, যেন নতুন ইকোনমিক জোন না করে সুবিধা নেওয়া যায়।’
আরও পড়ুন
‘একটি প্রাইভেট সেক্টর অ্যাডভাইজরি বোর্ড করার চেষ্টা চলছে। যেখানে বিডার আওতায় পলিসি মেকিংয়ে মতামত দিতে পারে। যারা বাংলাদেশে এত বছর ব্যবসা করেছেন তারা আসলেই ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। কারণ এতো যুদ্ধ করে তারা ব্যবসা করছেন এবং এখনো করে যাচ্ছেন।’
এসময় প্রাইভেট সেক্টরে বিনিয়োগকারীদের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করতে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের প্রতি আহ্বান জানান বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, নেগেটিভ-পজেটিভ উভয়ই বলবেন এবং তা প্রচার করবেন। বাংলাদেশ যে বিনিয়োগের জন্য ভালো তা প্রচার করবেন। সরকারকে পুশ করবেন, তাদের ভুলগুলো ধরিয়ে দেবেন। ২০২৫ বাংলাদেশের জন্য একটি গিয়ার শিফট হিসেবে কাজ করবে। আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
এসআরএস/এমকেআর